জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) বেশকিছু লক্ষ্যমাত্রাসহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণে সফলতার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের প্রশংসিত হওয়ার পাশাপাশি তাদের পাশের হারও আশা জাগানোর মতো বিষয়। সর্বশেষ এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, মেয়েদের পাসের হার ৭০.৪৩ আর ছেলেদের পাসের হার ৬৭.৬১। গত বছর এই সংখ্যা আরও বেশি ছিল। এসএসসির ফলাফলেও একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। এসএসসিতে ছাত্রীদের মোট পাসের হার ৮০.৭৮ এবং ছাত্রদের ৭৯.৯৩। এই পরিসংখ্যানগুলো আশার খবর হলেও শনিবার চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মাধ্যমিক স্তরে এগিয়ে থাকলেও উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে যেখানে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫২ শতাংশ সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থী মাত্র ৩০ শতাংশ। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চিত্র প্রায় একই ধরণের। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে চ্যানেল আইকে সরবরাহ করা ৭টি বিভাগের তথ্য বিশ্লষণে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ৯শ’৯৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬শ’৯০ জন অর্থাৎ ৬৯ দশমিক দুই শুন্য শতাংশ। আর মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩শ’৭ জন অর্থাৎ ৩০ দশমিক সাত নয় শতাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের তথ্যমতে, মেয়ে শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি ভর্তি হয়েছে একাউন্টিং বিভাগে ৭১ জন। এরপরের অবস্থানে আছে বিবিএ ৬৬ জন। রসায়নে ভর্তি হয়েছে মাত্র ২৯ জন মেয়ে শিক্ষার্থী। সারা বিশ্বে যখন মেয়েরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই চিত্র আমাদেরকে কিছুটা ভাবিয়ে তোলে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে মেয়েরা ছেলেদের চেয়েও ভালো ফলাফল করে কেন উচ্চ শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না, তার কারণ খুঁজে বের করে এই দুরাবস্থা দূর করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হতে আমরা আহ্বান জানাই। আমরা মনে করি, উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের যথাযথ অংশগ্রহণ ব্যতীত কোন দেশের পক্ষে উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব নয়।