‘কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে মেহমানদারী করতে পারেন না। আপনারা পদক্ষেপ না নিলে আদেশ দিতে বাধ্য হব।’
আলোচিত পি কে হালদারের অর্থ পাচার ও আত্মসাতে সম্পৃক্ততায় অভিযোগ ওঠা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুর চৌধুরী ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম কেন্দ্রিক শুনানিতে হাইকোর্ট দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেন।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসময় বলেন, ‘দুদক তাদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ না নিলে আদেশ দিতে বাধ্য হব।’
এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর বাংলাদেশে ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম ও খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
আজ শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, এস কে সুর ও শাহ আলমের নাম বিভিন্ন মাধ্যমে আসছে। তারা গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? জবাবে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘দুদকের চিঠির ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তাদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে।’
তখন দুদকের আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন রেখে আদালত বলেন, ‘গ্রেপ্তার করছেন না কেন? আপনারা পদক্ষেপ না নিলে আদেশ দিতে বাধ্য হব। আগে তাদের ধরেন। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে মেহমানদারী করতে পারেন না।’
এদিকে পিকে হালদারের পালিয়ে যাওয়া ও বিভিন্ন আর্থিক ক্যালেঙ্কারীর সাথে সম্পৃক্ত বাংলাদেশে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়ে দুটি প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ও বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে পিকে হালদারের দেশ ত্যাগের বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন দাখিলের সময় চাইলে আদালত আগামী ৬ এপ্রিল এবিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় যে, পিকে হালদার জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হতে বসেছে এবং গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এসবের মাঝেই পিকে হালদার গোপনে দেশ ছাড়েন। একপর্যায়ে পিকের বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সাথে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তার গ্রেপ্তারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চান উচ্চ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। পরে জানা যায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়েছেন পিকে হালদার।