লিওনেল মেসির দলবদল নিয়ে সবাই সবার মনের ইচ্ছার কথা জানাচ্ছে। পরামর্শ-সমালোচনার চেয়ে উদ্বেগ-আকুতিই বেশি। মেসিকে পেতে চাইছে একাধিক ক্লাব। যাদের কিনে নেয়ার সুযোগ নেই তারাও পিছিয়ে নেই, চাইছে পছন্দের খেলোয়াড়টি বার্সেলোনা ছেড়ে গেলে ‘ওই’ ক্লাবেই যাক। কেউ কেউ মিছিলও করছে মেসির মনোযোগ কাড়তে, কেউ দিচ্ছে বার্তা, কেউ জানাচ্ছে আকুতি।
সেই তালিকায় যখন একজন প্রেসিডেন্টের নাম ওঠে, খানিকটা নড়েচড়ে বসতেই হয়। তিনি আর কেউ নন, মেসির জন্মভূমি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফার্নান্দেজ। যার চাওয়া, জন্মভূমিতে শৈশবের ক্লাবে ফিরুক ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা মহাতারকা।
আর্জেন্টিনার রোজারিওতে আছে এক ক্লাব, নাম নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ। যার বিশ্ব পরিচয়, মেসির শৈশবের ক্লাব। যেখান থেকে অপার সম্ভাবনাময় মেসিকে এনে চিকিৎসা করিয়ে গড়েপিঠে নিয়ে ঘরের ছেলে বানিয়ে ফেলে বার্সেলোনা। ২০০১ সালে বার্সার যুব একাডেমিতে যোগ দেয়ার আগে পর্যন্ত ওল্ড বয়েজে খেলতেন মেসি, করতেন কাড়িকাড়ি গোল।
প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফার্নান্দেজ দলবদলের উত্তপ্ত এই সময়ে মেসিকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন সেই ওল্ড বয়েজের কথাই। শেকড়ে ফিরতে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন, আশা করছেন জন্মভূমিতে ফিরে আবারও নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের জার্সিতে নামবেন মেসি, এমনকি সেখানেই একদিন ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন।
সিফাইভএন-এ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তুমি আমাদের সকলের হৃদয়ে আছ, আমরা কখনই তোমাকে আমাদের দেশে খেলতে দেখিনি। আমাদেরকে সেই খুশিটা দাও, নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে এসে ক্যারিয়ার শেষ করো, এটা তোমারই ক্লাব।’
মেসিকে শৈশবের ক্লাবে ফেরাতে বসে নেই ওল্ড বয়েজের সমর্থক গোষ্ঠীও। তারা রীতিমতো মিছিল নিয়ে নেমেছে রাস্তায়। শৈশবের ক্লাবের প্রতি মেসির ভালোবাসার কথা অবশ্য কারও অজানা নয়। সম্ভব হলে সেখানে কোনো একসময় যে তিনি খেলতে চান, সেটা নিজ মুখেই বলেছেন অনেকবার।
সেই কোনো এক সময়টা এখনই কেনো নয়! সম্ভব হলে সামনের মৌসুম থেকেই মেসিকে পাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমেছিল একদল রোজারিও সমর্থক। ক্লাবের স্লোগান ‘তোমার স্বপ্ন, আমাদের ইচ্ছা’ গাইতে গাইতে ক্লাবের লাল-কালো পতাকা হাতে মিছিল করেছে তারা। অনেকের মাথায় টুপি ছিল, যাতে শোভা পেয়েছে মেসির ছবি। ছবিতে রোজারিও’র জার্সি পরে আছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
মেসিকে নিউওয়েলসে ফেরানোর আবদারটা সময়ের বিচারে এখন খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেলেও অসম্ভব কিছু নয় বলে মনে করেন ক্লাবটির ইংলিশ সমর্থকদের প্রধান জেমি রালফ। ডিয়েগো ম্যারাডোনা ৩৩ বছর বয়সে সেভিয়ার হয়ে খেলতে পারলে মেসির শৈশবের ক্লাবে ফেরাটাও কঠিন কিছু নয় বলে মত তার।
‘ম্যারাডোনা স্পেনে ফিরে সেভিয়ার হয়ে খেলেছিলেন। সেটা ছিল ’৯৪ বিশ্বকাপের সময়। তার বয়স ছিল ৩৩, মেসির বয়সের সমানই। যদি তিনি নিউওয়েলসে এসে খেলেন, সেটা হবে অবিশ্বাস্য।’