অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার করবে শতভাগ সত্য। তবে জাতি হিসেবে মানুষের সৃজনশীল ও মননের উন্নয়নও খুবই জরুরি। আজকের শিশুরা আগামীতে নেতৃত্বে আসবে। তারা যদি মুক্ত অবারিত সবুজে খেলাধুলার সুযোগ না পায় তারা ঝুঁকবে নানান অপকর্মে!
ঘরে বন্দি, কম্পিউটার নির্ভর শিশু-কিশোর-তরুণেরা ডিজিটাল ডিভাইসের আসক্তি থেকে মাদকাসক্তের মত অপঘাতে জড়াচ্ছে, আরো জড়াবে। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর ধাক্কা ইতোমধ্যে ঘরে ঘরে অভিভাবকেরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্ত অবাধ্য সন্তানদের নিয়ে ঘোর বিপাকে তারা। আর এভাবে চলতে থাকলে এদিন এদেশের স্বপ্নের সমান বড় নানান মেগা প্রকল্পগুলোর পরিচালনায় দক্ষ, মানবিক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কর্মী পাবে না বাংলাদেশ। সুতরাং উন্নয়ন হোক অবকাঠামোগত এবং এর সমান্তরালেই চলুক মেধা মননের সৃষ্টিশীল মানবিক উন্নয়ন।
তাই মানবিক, দক্ষ ও মানবীয়বোধসম্পন্ন হিসেবে বেড়ে উঠতে শিশুদের জন্য বিনিয়োগ করুন! তাদের খেলার মাঠ বরাদ্দ দিন। শিশু-কিশোর-তরুণদের হাতে পাঠ্য বইয়ের বাইরে আনন্দদায়ক বই দিন, খেলাধূলার সুযোগ দিন প্লিজ। তা না হলে ২০৪০ সাল দেখে যেতে পারি কি না? ২০৩০ সাল নাগাদ এদেশের বহু আশা ও আকাঙ্ক্ষার সেই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না! বরং লুটেরা, দূর্নীতিবাজ, সর্বগ্রাসী, হিনমন্য, অস্থির হালের নাহিদ-মোরসালিনদের কুপিয়ে মারার সেই পাষাণ দাঙ্গাবাজ, মারকুটে, বেপরোয়া তরুণ সমাজ বোঝা হবে পরিবার-সমাজ ও রাষ্ট্রের!
নীতি নির্ধারকেরা কোনটা চান আপনারা? কারণ, বনে আগুন লাগলে কমবেশি নিচু, অপেক্ষাকৃত উচু কাণ্ডেও আঁচ লাগে। সেই আঁচে দেরিতে হলেও সবচেয়ে লম্বা গাছটিও আক্রান্ত হয়, নুয়ে পড়ে। সুতরাং যারা ভাবছেন তাদের সন্তানেরা তো এদেশে থাকবে না! কিংবা তাদের জন্য আমেরিকা-কানাডা হালে চাঁদে বা মঙ্গলগ্রহে আবাসনের ব্যবস্থা করছেন! তবে বলি সেখানেও পৌঁছে যাবে সেই সর্বগ্রাসি আগুনের উত্তাপ। হাজার কোটি বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের সুফল পেতে দক্ষ-মানবিক নেতৃত্বের প্রয়োজনেই নৈতিক শক্তির মনন ও সৃজনের চর্চার সুযোগ দিন আপনার আমার আমাদের সন্তানদের প্লিজ!
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)