বাগেরহাটের মোল্লাহাটে দেড় বছর বয়সী শিশু ডিপজল হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন আসামিকেই খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাদের মধ্যে শিশুটির মা-ও রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের আপিল গ্রহণ ও ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য আবেদন) খারিজ করে এই রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাইফুর রহমান রাহি। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ মান্নান মোহন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম।
ফজলুল হক খান ফরিদ পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘চাক্ষুষ সাক্ষী না থাকায় এবং শিশুটির হত্যার বিষয়ে বাদি পক্ষের তথ্য-বক্তব্যে গড়মিল থাকায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন।’
আর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ মান্নান মোহন বলেন, ‘এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।’
মামলায় ডিপজলের মা লতিফা বেগম ছাড়াও অন্য দুই আসামি হলেন, মোল্লাহাট উপজেলার নগরকান্দি গ্রামের আয়েন উদ্দিন মোল্যার ছেলে মনির মোল্যা ও নাজমা বেগম। মনির মোল্যা ও নাজমা বেগম সম্পর্কে ভাই-বোন।
২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল ভোরে শিশু ডিপজল নিখোঁজ হয়। পরের দিন বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিনই মোল্লাহাট থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়।
এরপর তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ১০ মে এজাহারভুক্ত দুই আসামি ও শিশুটির মা লতিফা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মোল্লাহাট থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজিবুল হক।
মামলার বিবরণে বলা হয়: লতিফা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী মনির মোল্যার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে স্ত্রী লতিফা বেগমকে মারধর করেন স্বামী ইকু বিশ্বাস। এতে আসামিরা ইকু বিশ্বাসের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনাটি ঘটায় বলে উল্লেখ করা হয়।
২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম সোলায়মান শিশু ডিপজলকে পানিতে ফেলে হত্যার অপরাধে মা ও দুই প্রতিবেশীকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এ রায়ের পরে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে বিষয়টি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিল করেন।
আসামিদের সে আপিল খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট মঙ্গলবার রায় দিলেন।