জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চারশ ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিং শুরু করা বাংলাদেশ কাটিয়েছে ঝলমলে একটি দিন। মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরিতে স্বাগতিকরা পেয়েছে প্রত্যাশার চাইতেও বড় পুঁজি। ব্যাট হাতে তার পারফরম্যান্সের দ্যুতিতে সাদা পোশাকে বাংলাদেশ রঙিন করে নিয়েছে ঢাকা টেস্টের আরেকটি দিন।
৭ উইকেট হারিয়ে ৫২২ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সফরকারী জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ-৫২২/৭(ইনিংস ঘোষণা), জিম্বাবুয়ে-২৮/১ (দ্বিতীয় দিন শেষে)
পড়ন্ত বিকেলে তাইজুল ইসলামের বলে সাজঘরে ফিরেছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। স্লিপে দাঁড়ানো মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক করেন ১৪ রান।
মুমিনুল হকের ১৬১ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ প্রথম দিন শেষ করে ৫ উইকেটে ৩০৩ জমা করে। দ্বিতীয় দিনে উইকেট পড়েছে মাত্র দুটি। যোগ হয়েছে ২১৯ রান। মুশফিক ও মেহেদী হাসান মিরাজের অষ্টম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থাকেন ১৪৪ রান তুলে।
অষ্টম উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সেরা জুটি। ২০১০ সালে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নাঈম ইসলামের সঙ্গে মুশফিকের ১১৩ রানের জুটি ছিল আগের সর্বোচ্চ। ইনিংস ঘোষণার আগে মুশফিক ২১৯ ও মিরাজ ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
মিরপুরের সকাল ছিল রৌদ্রজ্জ্বল। মুশফিকের ব্যাটের ঝলকানিতে সেটি হয়ে ওঠে আরও ঝলমলে। টেস্ট ইতিহাসের প্রথম উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়েন দুটি ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি ছিল মুশফিকেরই, ২০১৩ সালে গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। দেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে দুটি ডাবল ছুঁলেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মিরপুরে দেশের হয়ে প্রথম ডাবল করা ব্যাটসম্যানও মুশফিক।
মুশফিক ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন প্রথম দিনের সকালে যখন ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে বোলারদের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করে বাংলাদেশের ইনিংস নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। ৬ বছর পর মিরপুরে পাঁচশ ছাড়ায় বাংলাদেশের ইনিংস।
সবশেষ ২০১২ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চারশ পেরিয়েছিল স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে টাইগাররা করেছিল ৫৫৬ রান। মিরপুরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ সেটি।
আগের দিনের ১১১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা মুশফিক ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন চা-বিরতির পরপরই। তার ২১৯ রানের ইনিংসে ছিল ১৮টি চার ও একটি ছক্কা। খেলেন ৪২১ বল।
গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪১৭ বল খেলে ১৯০ রানে আউট হন আশরাফুল। বল মোকাবেলায় আশরাফুলকে ছাড়িয়ে যান মুশফিক।
রোববার ম্যাচের প্রথম দিন ১৬১ রান করে আউট হওয়া মুমিনুল হক জানিয়েছিলেন এই উইকেটে ব্যাটিং করা কঠিন। থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানও হঠাৎ করে এখানে আউট হয়ে যেতে পারেন। সেই ২২ গজে মুশফিক ৫৬৪ মিনিট কাটিয়ে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরিটি।
সকালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৬ করে ফিরে গেলে দিনের প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কাইল জারভিসের বলে অযথাই খোঁচা দিয়ে অধিনায়ক ফেরেন সাজঘরে। একই বোলারকে উইকেট দেন আরিফুল হক (৪)।
পরে আর উইকেট হারাতে হয়নি মুশফিক-মিরাজের দৃঢ়তায়। বাংলাদেশের ইনিংসে জারভিস একাই নেন পাঁচ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন চাতারা ও ত্রিপানো।