প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতেই চাকরিতে তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনীদের জন্য কোটা চালু করা হয়েছে। তারা যদি যুদ্ধ না করতেন তাহলে বাংলাদেশ আসতো না, স্বাধীন বাংলাদেশ দেখা সম্ভব হতো না। তারা যুদ্ধ করেছিলো বলেই আপনারা আজ বড় পদে আসীন হতে পারছেন। তাই কোটা থাকবে। তবে, চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ না হলে মেধাবীদের সুযোগ দেওয়া হবে।
পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ আসলে উন্নয়ন হয় আর বিএনপি আসলে দেশ জুড়ে খুন-খারাবি করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন: ‘বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে খুনের রাজনীতি শুরু করে। হিন্দু-মুসলিম কেউ তাদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পায়নি। এমনকি তাদের নিজেদের লোককেও তারা ছাড়েনি।’
তিনি বলেন: খালেদা জিয়ার নির্দেশ ২০১৪ সালে তারা দেশজুড়ে প্রায় ৯ মাস ধরে অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। স্কুল কলেজের বাচ্চারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে ভয় পেতো। বাসে পেট্রোল বোমা মেরে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করা হতো।
‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ ছিল জঙ্গিবাদের দেশ। ‘বাংলা ভাইয়ের দেশ’ বলে বর্হিঃবিশ্বে যে পরিচিতি পেয়েছিলো তা এখন আর নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন: এই চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছে। এ অস্ত্রের ব্যবসা করতো কে? খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কালো টাকা সাদা করেছে। তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও কোকো এবং সে সময়কার অর্থমন্ত্রীও কালো টাকা সাদা করেছে। এটা দেশের ইতিহাসে বিরল এবং লজ্জার।
তিনি বলেন: ‘২০০১ সালে আমি ক্ষমতায় আসতে পারেনি নাই। কেন? আমি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেইনি। খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল। ভারত-আমেরিকার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেয় নাই।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন: কোরআনে বলা আছে, এতিমের হক মেরো না, এতিমের প্রাপ্য তাকে বুঝিয়ে দাও। কিন্তু, বিদেশ থেকে টাকা এনে তা খালেদা জিয়া এবং তার ছেলে (তারেক) আত্মসাৎ করেছে।
‘যে মামলায় তার সাজা হয়েছে, সে মমলা দিয়েছে কে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা কারা? ইয়াজউদ্দিন- ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন তাদেরই লোক। তাদের আমলেই দুদক মামলা করেছে। এখানে আওয়ামী লীগ সরকারের কিছু করার নেই।’
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন: ‘তারা আইন মানবে না, কানুন মানবে না, জনগণের টাকা লুট করে খাবে! শাস্তি হলে আবার হুমকি ধামকি দেবে। এদের বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে।’
ওই জনসমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন: ভিক্ষুকের আর যাই থাকুক মর্যাদা নেই। বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মর্যাদাশীল দেশ, উন্নয়নশীল দেশ।
এসময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি তুলে ধরেন।
এর আগে, সকাল পৌনে ১১টায় হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নেভাল একাডেমিতে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আবক্ষ প্রতিকৃতিসহ মোট ৪২টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন।