মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন হওয়া নতুন নাগরিকত্ব আইনে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরোধীতাকারীদের নাগরিকত্ব যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, আইন পাশের আগের ঘটনা হওয়ায় যুদ্ধাপরাধীরা এই আইনের আওতায় পড়বে না। তবে কোনো যুদ্ধাপরাধী বা বাংলাদেশ বিরোধী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাইলে তা পাবেন না।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদ দেওয়া হয়।
খসড়া অনুসায়ী যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলো বা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলো বা করছে এমন ব্যক্তিরা নাগরিকত্ব পাবে না। এছাড়াও বাংলাদেশ বিরোধী কোনো বাহিনীকে সহায়তা করলেও নাগরিকত্ব পাওয়া পাবে না।
আইনের এই বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের দেশের প্রতি অনুগত থাকা উচিত। তাই কেউ যদি দেশের বিরোধীতা করে তবে তার নাগরিকত্ব থাকা উচিত নয়। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরোধীতাকারীদের বিষয়েও কথা বলেন তারা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোন্দকার মাহাবুব হোসেন বলেন, এই আইনটি যেদিন থেকে কার্যকর হবে সেদিন থেকেই এ আইনে যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে সে বিষয়গুলো কার্যকর হবে। তবে ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলো তাদের পক্ষে এটি প্রযোজ্য হবে না।
সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, বিদেশী কেউ যদি এখানে নাগিরকত্ব চায় এমন যদি হয়, সে কখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছে অথবা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছে তাহলে এ সমস্ত নাগরিককে বাংলাদেশ নাগিরকত্ব দেওয়া হবে না। তবে প্রশ্ন হলো কোনো বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে তাহলে সেসব নাগরিকদের বিচার হবে।
বাংলাদেশে নাগরিকত্ব নিয়ে এতোদিন যে আইন ছিলো তাতে অনেক কিছুই অস্পষ্ট থাকায় এই আইন দেশের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ছিলো বলে মনে করছেন দুই আইনজীবী।
আইনজীবী খোন্দকার মাহাবুব হোসেন মনে করেন, এই আইনটা আমাদের দরকার ছিলো। যেহেতু আমাদের দেশে নাগরিকত্ব আইন ছিলো না সেহেতু এই আইনটি বাস্তবায়ন হওয়াটা খুব জরুরি।
ব্যারিস্টার শফিক আহমেদও বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে নাগরিকত্বের যে বিষয় আছে সেটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক না বলেই আমার মনে হয় একটি বাস্তব পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।
নতুন আইন পাশ হলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং সাংবিধানিক পদধারীদের মধ্যে যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে তাদের বিদেশের নাগরিকত্ব বাদ দেবার জন্য নির্দিষ্ট সময় দেবার কথা বলেন এই আইন বিশেষজ্ঞরা।