রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের জন্য যথেষ্ট চাপের মুখে পড়েছে মিয়ানমার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এর মধ্যেই মানবাধিকার ও দুর্নীতির অভিযোগের দায়ে মিয়ানমারের জেনারেল মং মং সোকে কালো তালিকা ভুক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন বিবৃতিতে বলা হয়, মং মং সো রোহিঙ্গা নিধন অভিযানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন এবং রোহিঙ্গা সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন।
গতমাসে মিয়ানমারে তার পদাধিকার পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু কেন এই পরিবর্তন সেই বিষয়ে কোন জবাব দেয়নি সেখানকার মন্ত্রণালয়। এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসন্ধান দল মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
একই সঙ্গে সারা বিশ্বের আরো ৫২ জনের উপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) এর মতে, ৬ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময় মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। জলপথের পাশাপাশি স্থলপথেও তারা বাংলাদেশে আসে। তবে এ সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি ছাড়িয়ে যাবে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মিয়ানমারের সাধারণ মানুষকে হত্য করার কথা অস্বীকার করে বছে, তারা তাদের দেশে থাকা রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
আগস্ট মাসে মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যে কথিত রোহিঙ্গা মুসলিম বিদ্রোহী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সার্জিক্যাল অপারেশন শুরু করে সেনাবাহিনী। এর ফলে শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।
ওই অভিযানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। পরিকল্পিত ধর্ষণ, খুন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পরে মিয়ানমার। এমন সময় এই সামরিক অভিযান চলাকালে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা।
জাতিসংঘ সেনাবাহিনীর রাখাইন উচ্ছেদের এই অপারেশনকে ‘পাঠ্যপুস্তকে লেখা জাতিগত নিধন’ নামে আখ্যা দিয়েছেন। মিয়ানমার সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গারা মূলত মুসলামান। তারা বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী হয়ে গেছে।তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।