রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় মিয়ানমার সরকারকে ‘অপরাধের শাস্তি’ পেতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি সরকারি বাহিনীর নিপীড়ণের বিরুদ্ধে এমন হুমকি দেয়। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘সামরিক সহায়তা’ নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য মুসলিমদের প্রতি আহ্বানও জানায় আল কায়েদা।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তবে কক্সবাজারের স্থানীয়রা বলছেন, মিয়ানমারে চলমান সহিংসতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫শ মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।