চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মিরপুরের উইকেট ‘জঘন্য’ না, আদর্শও নয়

সিলেট-চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা জমছে। কিন্তু হোম অব ক্রিকেটে এসেই যেন রং হারাচ্ছে ব্যাট-বলের জৌলুস। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটের চরিত্র নিয়ে তাই আলোচনা ছিলই। একদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে বিরক্তি প্রকাশ করে সেটাতে ঘি ঢালেন মাশরাফী ও তামিম! তামিম এমন মন্থর উইকেটকে ‘জঘন্য’ বলে যাওয়ার পর মাশরাফী মন্তব্য করেন ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে। ইসমাইল হায়দার মল্লিক অবশ্য টাইগার ক্রিকেটের বড় দুই তারকা সতীর্থের কথা উড়িয়ে দিতে চাইলেন রোববার। বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিবের মতে, মিরপুরের উইকেট ‘জঘন্য’ না। তবে স্বীকার করতে বাধ্য হলেন টি-টুয়েন্টির জন্য আদর্শ নয় বলেও।

ইসমাইল হায়দার দুই অধিনায়কের কথা খণ্ডন করতে যেয়ে অজুহাত হিসেবে টেনে আনলেন বেশ কয়েকটি বিষয়কে। তার সমালোচনার তীর ব্যাটসম্যানদের টেকনিক নিয়েও।

‘খালি চোখে এটা টি-টুয়েন্টির উইকেট মনে হয় না। উইকেট একটু মন্থর। কিন্তু ১০০ রানের কম করার মতও না। ১৪০, ১৫০ করার মত উইকেট। গতকাল এক ম্যাচে হল ৯৭, আরেকটিতে ২০৫। মানিয়ে নিয়ে যদি খেলে; ১৫০-১৬০এর মত উইকেট। তারপরও কিউরেটরের সঙ্গে বসেছি। তাদের বলেছি আরেকটু ব্যাটিং সহায়ক করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে। উইকেট আসলে এতটা খারাপ না, যতটা মনে হয়েছে। একটা ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কম স্কোর হয়ে গেছে। ব্যাটসম্যানরা থ্রো করে এসেছে বলেই মনে হয়েছে।’

মিরপুরের মন্থর উইকেটে টিকে থাকতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে দেশি-বিদেশি ব্যাটসম্যানদের। চার-ছক্কার বিনোদন দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে দর্শকদের। ব্যাপারটা ছুঁয়ে গেছে তামিমকে। শনিবার রংপুরের করা ৯৭ রান তাড়া করতে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়তে হয় তার দল কুমিল্লাকে। তারপরই হতাশা প্রকাশ করেন তামিম। একই অভিব্যক্তি ছিল রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফীরও।

সেটার প্রতিক্রিয়ায় মল্লিক বললেন, ‘জঘন্য উইকেট না। এই উইকেটেই কিন্তু ন্যাশনাল টিমের ম্যাচগুলো খেলে ওরা। তামিম, মাশরাফী ন্যাশনাল টিমের প্লেয়ার, তারা কিন্তু খেলে। টি-টুয়েন্টির জন্য অতটা ভাল না। সেদিক থেকে তামিম আমাকেও বলেছে উইকেট আদর্শ না। আমি বলছি এটা টি-টুয়েন্টির জন্য প্রোপার উইকেট না। কিন্তু জঘন্য উইকেটও না। এই উইকেটেই বাংলাদেশ ওয়ানডে, টেস্ট, টি-টুয়েন্টি খেলে। তখন জাতীয় দলের কথা চিন্তা করে উইকেট বানানো হয়। জাতীয় দলের অ্যাডভান্টেজের কথা চিন্তা করে বানানো হয়। তাই এই উইকেট রাতারাতি পরিবর্তন করা যায় না।’

কুমিল্লা-রংপুরের ম্যাচের মুহূর্ত

মিরপুরে রান না উঠলেও সিলেট-চট্টগ্রামে ঠিকই টি-টুয়েন্টির জন্য আদর্শ স্কোর উঠেছে। কখনও কখনও ছাড়িয়ে গেছে প্রত্যাশাকেও। কেবল মিরপুরে রান না ওঠায় তাই কিউরেটরদের সামর্থ্য-সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন এসেই যায়। তিন ভেন্যুর দায়িত্বে আলাদা তিন ব্যক্তি হওয়াতেই প্রশ্নটা আরও উচ্চকিত হচ্ছে। মিরপুরের উইকেটের কিউরেটর শ্রীলঙ্কান গামিনী ডি সিলভা। সিলেট ও চট্টগ্রামে সেখানে দেশি কিউরেটর।

সঙ্গত কারণেই চট্টগ্রাম ও সিলেটের সঙ্গে মিরপুরের উইকেটের তুলনা আসছে। সেই তুলনার প্রশ্নে ইসমাইল হায়দারের প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ভরা মজলিসে অপমানিত হতে হল একজন ক্রীড়া সাংবাদিককে। মল্লিকের ঝাঁঝাল কণ্ঠ থেকে বেরোল, ‘আপনি যদি বুঝতে না চান, পাগলকে তো আমি বোঝাতে পারব না। আমার উত্তর স্পষ্ট করে দিয়েছি। একটি উইকেটে ২০৫, আরেকটাতে ৯৭ হয়েছে। বলছি না আদর্শ উইকেট। আমাদের ব্যর্থতা আছে। এটা দেখতে হবে আরেকটু বেটার করতে পারি কিনা। তবে এটা জঘন্য না।’