ভবন নির্মাণের জন্য ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্যের জন্য শাস্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশন আইন-২০১৯ এর খসড়ার নীতিগত চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
নতুন আইনে ২ বছরের স্থলে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকার স্থলে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদেরকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম বলেন, এটি ১৯৭৩ সালে একটি প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার দিয়ে সৃষ্টি করা হয়। যেটি হচ্ছে ‘দি বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশন অর্ডার ১৯৭৩’ এবং এর উপর ভিত্তি করেই এতদিন চলছিল।
তিনি বলেন, ‘আইনের পরিবর্তন খুবই কম। যেটুকু পরিবর্তন হয়েছে তা হচ্ছে দণ্ডের মধ্যে একটু পার্থক্য আনা হয়েছে। আগে যে শান্তি ছিল সেই শাস্তিটাকে একটু বাড়ানো হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগে ৩৫ ধারায় বলা ছিল- কর্পোরেশনের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের উদ্দেশে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বিবরণী প্রদান করেন বা জানিয়া শুনিয়া মিথ্যা বিবরণী ব্যবহার করেন বা কর্পোরেশনকে যেকোন প্রকারে জামানত গ্রহণে প্রবৃত্ত করেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ২ বছর মেয়াদেও কারাদন্ড বা ২ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।’
শফিউল আলম বলেন, ‘নতুন আইনে এই শাস্তিকে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ২ বছরের স্থানে ৫ বছরের দন্ড প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর অর্থদন্ডতে ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ ৫ বছরের কারাদন্ড অথবা ৫ লাখ টাবা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, কর্পোরেশনের লিখিত সম্মতি ব্যতিরীকে যদি কেউ কর্পোরেশনের নাম কোন প্রসপেক্টাসে বা বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেন তার জন্য অতীতে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। এখানে নতুন আইনে কারাণ্ড ৬ মাস বলবৎ রেখে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন আইনের ক্ষেত্রে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন- হাউজ শব্দটি আগে ‘স’ দিয়ে ছিল এখন তা ‘জ’ দিয়ে করা হয়েছে। আর কয়েকটি জিনিস নতুন সংযোজন করা হয়েছে। খেলাপি ঋণ যেটি আগে ছিলনা সেটি সংজ্ঞার (ঘ) তে দেওয়া হয়েছে। তারপরে কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কথাটি আগে সংজ্ঞাতে ছিল না, পরিচালক শব্দটি ছিল না, এখন নতুনভাবে এই শব্দগুলো সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
৩ ধারাতে সুপার সিডিং কেস বা আইনের প্রাধান্য, অর্থাৎ এই আইনটি অন্য আইনগুলোর ওপর প্রাধান্য পাবে, সেই ধারাটি যুক্ত করা হয়েছে।
৫ ধারাতে একটি নতুন বিষয় সংযোজন করা হয়েছে কার্যালয়। অর্থাৎ এই কর্পোরেশনের অফিস হবে ঢাকাতে। আর ১১ ধারায় পরিচালকের মেয়াদ, এই মেয়াদি বলে দেওয়া হয়েছে। কোন পরিচালক সরকারের সন্তুষ্টিক্রমে এক মেয়াদে অনুর্ধ্ব ৩ বছর সময়ের জন্য বহাল থাকবেন।
সচিব বলেন, আগে ১১০ কোটি টাকা ছিল অনুমোদিত মুলধন যেটিকে এক হাজার কোটির প্রস্তাব করা হয়েছে আর পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ’ কোটি টাকা। আর অতীতের মতো ৭ জনের পরিচালনা পর্ষদ বহাল রাখা হয়েছে। অতীতের নিয়মেই সরকার কতৃর্ক এর চেয়ারম্যান নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।
তিনি বলেন, আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী কর্পোরেশনের একজন চেয়ারম্যান থাকবেন, যিনি সরকার কতৃর্ক নিযুক্ত হবেন এবং শর্তাবলীও সরকার ঠিক করবেন। আর নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত পূর্বের চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন।