আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারি! কণ্ঠশিল্পী তানজীব সারোয়ার দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি তার গুণের কথাও কারো অজানা নয়! মেঘ মিলন, দিল আমার, প্রেম পবন, বড় ভালোবাসির মতো আরো বেশকিছু তুমুল জনপ্রিয় গান তার ঝুলিতে। ‘ডুবে ডুবে’র পর এ গায়ক তার কণ্ঠে ‘মন পোষ মানে না’ নামে একক গান ভিডিও নিয়ে আসছেন। একই সঙ্গে জানালেন, ‘শিগগির অভিনয়ে আসতে চলেছেন তিনি!’
গান, করোনাকালীন সংগীত পরিস্থিতি, গায়ক থেকে অভিনেতা হতে চাওয়ার পরিকল্পনার কথা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন তানজীব সারোয়ার-
নতুন গান ও মিউজিক ভিডিও’র কী খবর?
গানের টাইটেল ‘মন পোষ মানে না’। এটা পপ ক্লাসিকাল মিক্সডে করা। বিশেষত্ব হচ্ছে, আগের গানগুলো যেভাবে গেয়েছি তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে ভয়েস ডেলিভারি দিয়েছি। গানে কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি লেখা ও সুর করা আমার। সংগীতায়োজন সাজিদ সরকারের। মিউজিক ভিডিও পরিচালনা করেছেন তানিম রহমান অংশু ভাই। আমার সঙ্গে মডেল আন্নি। গানটা দুঃখের তাই ভিডিওতে দুঃখের গল্প থাকছে। কুয়াকাটার সুন্দর সব লোকেশনে শুটিং করেছি। সিডি চয়েজের ব্যানারে নভেম্বরে গানটি প্রকাশ হবে।
‘ডুবে ডুবে’ গান থেকে কেমন সাড়া পেলেন?
‘ডুবে ডুবে’ গানের পর পূজার সঙ্গে ডুয়েট গান করেছি। কিন্তু ‘ডুবে ডুবে’র পর ‘মন পোষ মানে না’ প্রথম একক গান। ‘ডুবে ডুবে’ থেকে যেমন ভালোবাসা পেয়েছি তেমনটি গানটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষ করে টিকটক বা বিভিন্ন ভিডিও থেকে লাখ লাখ মানুষ দেখে প্রশংসা করেছেন। সত্যিই ব্লেসড।
মিউজিক ভিডিওতে ভিউ নাকি প্রশংসা কোনটা প্রধান্য দেন?
গানের ভিউয়ে ফোকাস করি না। প্রথমে অডিও গানে ফোকাস দেই৷ গানটি মানুষ নিজের সঙ্গে মিলিয়ে যেন বেশিদিন মনে রাখে এটাকে সবসময় প্রাধান্য দেই। তারপর সময়ের সঙ্গে চলার জন্য মিউজিক ভিডিও নিয়ে ভাবি।
গাওয়ার পাশাপাশি বেশিরভাগ গান নিজে লিখে নিজেই সুর করতে দেখা যায় আপনাকে…
আমি আগে সুর করে পরে গান লিখি। এতে যেমন কমফোর্ট ফিল করি তেমনই নতুনত্ব রাখতে পারি। এটা আমার স্বকীয়তা৷ এ জন্য নিজের ৯৮ শতাংশ গানই আমার লেখা ও সুর থাকে৷ তবে অন্যদের লেখাও ভালো লাগে৷ প্রিন্স মাহমুদ ভাই, সোমেশ্বর অলি ভাইয়ের লেখাও ভালো লাগে। তাদের সঙ্গে অনেকগুলো কাজ করেছি।
করোনায় সব সেক্টর ক্ষতির মুখে পড়েছে। শিল্পীদের বড় বড় কনসার্ট বাতিল হয়েছে। সবমিলিয়ে করোনায় সংগীতাঙ্গন কতটা বিপর্যস্ত হচ্ছে বলে মনে হয়?
যারা নতুন কাজ করছে তাদের জন্য এটা বড় বিপর্যয়। এছাড়া যারা কনসার্ট বা স্টেজ পারফর্ম বেশি করেন তাদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি করেছে করোনা। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হচ্ছে, নিজের স্টুডিওতে বেশি সময় দিতে হয়েছে। কয়েকটি গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং চূড়ান্ত ছিল। সেগুলো বাতিল হয়েছে। যেমন- ‘মন পোষ মানে না’ গানের শুটিংয়ের কথা ছিল ইন্ডিয়াতে। করোনার জন্য বাংলাদেশে করতে হয়েছে।
সংগীতে বড় বড় প্রোডাকশন হাউজ মিউজিক ভিডিও কমিয়ে নাটকে ঝুঁকছে। তারা বলছে, মিউজিক ভিডিওর বাজেটে নাটক নির্মাণ সম্ভব৷ মিউজিক ভিডিওর জন্য এটি অশনি সংকেত?
প্রায় একই বাজেটে মিউজিক ভিডিওর চেয়ে ইউটিউবে নাটকে ওয়াচ টাইম বেশি। এতে রেভিনিউ বেশি আসে। এজন্য কোম্পানিগুলো ধীরে ধীরে নাটকে ফোকাস করছে। সামনের দিনে মিউজিকের জন্য এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমি মনে করি, অডিও কোম্পানির শুধু অডিও গানে ফোকাস করা উচিত। নাটকের জন্য আলাদা চ্যানেল হওয়া উচিত।
গান থেকে অনেকেই অভিনয়ে এসেছেন। সুদর্শন গায়ক তানজীব সারোয়ারকে কি অভিনয়ে দেখা যাবে?
বহুবার অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েও হাসিমুখে না করেছি। আসলে অভিনয় করা নিয়ে আমি চিন্তিত। ভাবি আমার দ্বারা অভিনয় হবে কি হবে না! তবে ইন্ডাস্ট্রির মোস্ট সিনিয়র অনেকেই আমাকে অভিনয় করতে বলেন। তাদের অনুপ্রেরণায় টুকটাক কাজ করতে পারি। তবে মিউজিকটাই আমার আসল কাজ হবে। অলরেডি আরিয়ান ভাইয়ের (মিজানুর রহমান আরিয়ান) সঙ্গে একটা কাজের ব্যাপারে কথা হয়ে আছে। তার নাটকে একাধিক গান করেছি। করোনা না এলে হয়তো আমার অভিনয় করা নাটক প্রচারও হয়ে যেত। নতুন করে আবার চিত্রনাট্য তৈরি হচ্ছে। নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করবো। শিডিউল লক হয়নি। তবে আগামিতে কাজটি হবে এটা ফাইনাল।