চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শিল্পী খালিদ হোসেন

শেষ ইচ্ছানুযায়ি নিজের মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নজরুল সংগীতের বরেণ্য শিল্পী খালিদ হোসেন।

কুষ্টিয়ার কোটপাড়ার পৌর কবরস্থানে মায়ের কবরে দাফন করা হয় খালিদ হোসেনকে। খবরটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেন তাঁর ছেলে আসিফ হোসেন।

আসিফ জানান, বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন বুধবার রাত সোয়া দশটায়, তাঁর দাফনও হয়েছে আজ (বৃহস্পতিবার) রাত সোয়া দশটায়। বাবার ইচ্ছানুযায়ি উনার মায়ের কবরেই দাফন সম্পন্ন হলো।

এরআগে খালিদ হোসেনের প্রথম জানাজা বাদ ফজর তাজমহল রোডের বায়তুল আমান মিনার মসজিদে সম্পন্ন হয়। এরপর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় নজরুল ইন্সটিটিউটে। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে বারোটায় খালিদ হোসেনের মরদেহ নিয়ে কুষ্টিয়ার পথে রওনা দেয়া হয়, সেখানে পৌঁছুতে পৌঁছুতে রাত হয়ে গেলে তারাবী নামাজের পর আরেক দফা জানাজা শেষে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

বুধবার রাত সোয়া দশটায় রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) মারা যান খালিদ হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যার পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।

১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন নজরুল সংগীতের গুণী এই শিল্পী। কিন্তু দেশ বিভাগের পরে পরিবারসহ বাংলাদেশে স্থায়ী হন তিনি।

খালিদ হোসেন সংগীত প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষক হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের সকল মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ড এ দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুলগীতির আদি সুর ভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য।

খালিদ হোসেনের গাওয়া ছয়টি নজরুলসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আধুনিক গানের একটি ও ইসলামি গানের ১২টি অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে গুণী এই শিল্পীর কণ্ঠে।

সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০০ সালে একুশে পদক পান খালিদ হোসেন। এছাড়া পেয়েছেন নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদক, কলকাতা থেকে চুরুলিয়া পদকসহ আরও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।