দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সংসদ সদস্য (এমপি) পদ নিয়ে দুদক-এর কমিশনার এবং আইনজীবী দুই মত দিয়েছেন। কমিশনার শাহাবুদ্দিন বলেছেন, মায়ার এমপি পদে থাকতে কোনো বাধা নেই। রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তবে এই মামলায় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মায়ার সংসদ সদস্য পদ থাকা উচিৎ নয়। এটি একটি বিতর্কের বিষয়। সুতরাং এ বিষয়ে সংসদে আলোচনা হতে পারে।
দুর্নীতির মামলায় মায়াকে হাইকোর্টের খালাসের রায় বাতিল করে দেওয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় বুধবার প্রকাশ করা হয়।
রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে দুদক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন র্যাক এর নব নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে দুদকের কমিশনার শাহাবুদ্দিন বলেন, আইনগতভাবে দণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে কারো সংসদ সদস্যপদ খারিজ হয় না। তেমনিভাবে চূড়ান্ত সাজা না হওয়া পর্যন্ত আইনের দৃষ্টিতে কাউকে দোষী বলে গণ্য করা যায় না। আর তার ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তাছাড়া আমাদের দেশে সাজা চূড়ান্তের একমাত্র মালিক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তাই যতক্ষণ না সাজার বিষয়টি চূড়ান্ত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত মায়ার মন্ত্রী ও সাংসদ পদ বহাল থাকতে আইনী কোন বাধা নেই বলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন।
গত বুধবার মায়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দুদকের আইনজীবী অ্যাড. খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মায়ার সংসদ সদস্যপদে থাকার কোন বৈধতা নেই। তিনি আর সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন না। এ রায়ের পর তার সংসদ সদস্য পদ থাকা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার বলেন, ‘খুরশীদ আলম খান তার ব্যক্তিগত মত থেকে বলতেই পারেন। আমি এখানে আমার ব্যক্তিগতভাবে যা বুঝেছি তাই আপনাদের বললাম। এটা দুদকের বা কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো মতামত না’।
২০০৭ সালের ১৩ জুন দুদকের সহকারী পরিচালক নুরুল আলম সূত্রাপুর থানায় মায়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মায়ার বিরুদ্ধে ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এ মামলায় মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন আদালত।
২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় বাতিল করে আদেশ দেন।