নানা নাটকীয়তার পর মালয়েশিয়ার সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউনাইটেড ইন্ডিজেনাস পার্টির প্রধান মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির রাজা। আগামীকাল রোববার দেশটির অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি।
শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে মালয়েশিয়ার রাজা (সর্বোচ্চ নেতা) ইয়াং-ডি-পারতুয়ান আগং আল সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতউদ্দীন আল-মুস্তফা বিল্লাহ শাহ এ ঘোষণা দেন।
মালয়েশিয়ার রাজ পরিবারের একজন মুখপাত্র জানান, রাজা সংসদের ২২২ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জোহর রাজ্যের পাগোহ থেকে নির্বাচিত মুহিদ্দিন ইয়াসিনের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত পেয়েছেন। এ কারণে মালয়েশিয়ার সংবিধান অনুসারে রাজা তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।
গত মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন আধুনিক মালয়েশিয়ার কারিগর ডা. মাহাথির মাহাথির মুহাম্মদ। এ ঘোষণার পর সেদিন বিকেলে মাহাথির মালয়েশিয়ার রাজার সাথে সাক্ষাৎ করেন। মালয়েশিয়ার রাজা মাহাথিরের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলেও তাকে অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পর ডা. মাহাথির মাহাথির মুহাম্মদ জাতির উদ্দেশে টেলিভিশন ভাষণে বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে আপাতত আলাদা রাখতে হবে। যদি অনুমতি দেয়া হয় তবে আমি একটি নির্দলীয় প্রশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব; যা কোনো পক্ষকেই সমর্থন করে না। শুধু জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে, এটাই আমি করার চেষ্টা করব।
মূলত মালয়েশিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে জোটবেঁধে ২০১৮ সালে সবচেয়ে বয়স্ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাহাথির। তখনকার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাককে হারিয়ে বিপুল বিজয় অর্জন করেন তিনি।
কথা ছিল কিছুদিনের মধ্যে আনোয়ারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবসরে যাবেন মাহাথির। কিন্তু সেই কথা তিনি রাখেন নি। আনোয়ারকে দায়িত্ব না দিয়েই পদত্যাগ করেন। তার চাওয়া ছিল আনোয়ার ইব্রাহিমকে বাদ দিয়ে নতুন একটি জোট গড়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়া। সেজন্য নতুন এক খেলা শুরু করেছিলেন তিনি। নানান রাজনৈতিক কৌশলেও শেষ পর্যন্ত তার সে ইচ্ছা আপাতত অপূর্ণই রয়ে গেল।
বিগত কয়েক দশক ধরে মালয়েশিয়ার রাজনীতিকে প্রভাবিত করে আসছেন মাহাথির। এর আগে ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। দীর্ঘসময় ক্ষমতাসীন দল বরিসন নাসিওনালের (বিএন) সদস্য ছিলেন। তখন আনোয়ার ছিলেন মাহাথিরের ডান হাত। কিন্তু তাদের সম্পর্কে তিক্ততার জন্ম নেয় ১৯৯৮ সালে। নেতৃত্ব বিতর্কে তাকে পদচ্যুত করে মাহাথির।