‘‘ওখানে মেয়েটা ছিল, এখন নেই। ওর কোনো চিহ্নই দেখা যাচ্ছে না। মেয়েটা কি নদীতে পড়ে গেল? নদীতে পড়ে গেলে তো তলিয়ে যাওয়া সম্ভব না। ডাহুক নদীর এই জায়গায় সেই অর্থে গভীরতা নেই। স্রোত রয়েছে, সেই স্রোতে তো ভেসে যাওয়া সম্ভব না। তবে সাঁতার না জানলে অনেককিছুই সম্ভব। একমুহূর্ত ভাবল তমাল। ওখানে বালকটাকে দেখা যাচ্ছে, সে দাঁড়িয়ে আছে। হাত-পা ছুড়ছে কিংবা চিৎকারের চেষ্টা করছে। স্পষ্ট নয় এতদূর থেকে। তমাল দ্রুত দোতালা থেকে নেমে এলো। হাফপ্যান্ট ও টিশার্ট পরে ছিল সেভাবেই দৌড়াল। চা-বাগানের ভেতর দিয়ে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পৌঁছে গেল জায়গাটায়। মেয়েটা পড়ে আছে পাথরের ওপরে। এক পা পানিতে, পা থেকে রক্ত বের হয়ে প্রায় ভেসে যাচ্ছে।
না বুঝেই পিছু নিয়েছিল তপনও। তমাল কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। মেয়েটাকে সাপে কামড়েছে? প্রশ্নটা উঁকি দিলো মনে। তপন পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
‘এটা কি সাপের কামড়?’
তমাল সাপের কথা উচ্চারণ করতেই তপন বলল, ‘না সার, এই পাকে এই নদীত তেমন কোনো সাপ নাই। সাপ থাকিলে ঢোঁড়া সাপ থাকিবার পারে। এইটা সাপের কামড় নোহায়, তোরা ধরি তোলেন।’
চকিতে মেয়েটাকে দেখে নিল তমাল, জ্ঞান নেই। কী করবে এখন? কটেজে নিয়ে যাওয়ার কথাই ভাবল। বালক ছেলেটার চেহারা আতঙ্কে নীল হয়ে গেছে। মেয়েটাকে ওরা দুজন মিলে তুলে ধরল।’’
-সময়ের পরিচিত তরুণ কথাসাহিত্যিক মাহতাব হোসেনের নতুন উপন্যাস ‘সন্ধ্যার পরে’র অংশ বিশেষ। এরইমধ্যে উপন্যাসটির পাঠক প্রতিক্রিয়া বেশ চোখে পড়ার মতো।
লেখক নিজেও জালানেন, একটানে পড়ে ফেলার মতো উপন্যাস ‘সন্ধ্যার পরে’। বইমেলার অনিন্দ্য প্রকাশের ৫ নম্বর প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও রকমারি ডটকমসহ সকল অনলাইন বুকশপে উপন্যাসটি পাওয়া যাচ্ছে।
মাহতাব হোসেনের লেখা প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘তনিমার সুইসাইড নোট’ এসেছিল ২০১৬ সালের অমর একুশে বই মেলায়। বইটি পাঠকপ্রিয়তার দরুণ ওই গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটক। পরের বছর তার লেখা ‘ঈশ্বরদী বাইপাস’ বইটি প্রকাশ হয়।
২০১৮ সালে প্রকাশ হয়েছিল ‘বেসক্যাম্প হোটেলের মধ্যরাত’। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরের বছর ‘শর্মিলা’ ও ‘রৌদ্র বসন্ত’ নামে দুই বই এনেছিলেন লেখক ও সাংবাদিক মাহতাব হোসেন। ২০২০ এ প্রকাশ করেছিলেন ‘নগরে সমুদ্র’ বইটি।