দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস শেষে সবাইকে অবাক করে এমন ঘোষণা দেন টাইগারদের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক। চমকে যাওয়া খবরটি দিয়ে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘টি-টুয়েন্টি ইন্টারন্যাশনালে বাংলাদেশ টিমকে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি বিশ্বাস করি, বর্তমান দলটি একটি ভালো দল এবং দলে কিছু উদীয়মান খেলোয়াড় আছে। আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য এবং আমাকে এত চমৎকার দলের নেতৃত্ব প্রদানের সুযোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং কর্মকর্তাদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।’ মাশরাফি শুরু করেছিলেন সেই ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি দিয়ে। সেই থেকে চলমান সিরিজের প্রথম ম্যাচসহ খেলেছেন ৫৩টি ম্যাচ। এসব ম্যাচেে এখন পর্যন্ত তার উইকেট ৪১টি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ১৯ রানে চার উইকেট। এই ফরম্যাটে ব্যাট হাতে ১৩.৬২ গড়ে মোট ৩৭৭ রান করেছেন। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিতি পাওয়া মাশরাফি যখন দলে এসেছিলেন, তখন একজন ভালো পেস বোলারের ঘাটতি ছিল টাইগারদের। যদিও মোহাম্মদ রফিকের মতো আন্তর্জাতিক মানের স্পিনার ছিল। মাশরাফি শুধু সেই শূন্যস্থান পূরণই করেননি, দাপটের সঙ্গে খেলে গেছেন দীর্ঘ বছর। যদিও এই সময়ে ইনজুরি তাকে বারবার মাঠের বাইরে ঠেলে দিয়েছে। তারপরও নিজেকে উজার করে দিয়েছেন দলের প্রয়োজনে। এ কারণেই তিনি হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের নির্ভরতার প্রতীক। তার এই নির্ভরতার প্রমাণ দেয় ২০০৬ ক্রিকেট পঞ্জিকাবর্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে বিশ্বের সর্বাধিক উইকেট শিকারী হওয়ার ঘটনা। ওই সময় তিনি ৪৯টি উইকেট নিয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয়েও মাশরাফি বড় ভূমিকা রাখেন। সেই ম্যাচে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন। ওয়ানডেতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করা মাশরাফি আজ লাখো তরুণের কাছে আদর্শ। তার নেতৃত্ব গুণ, দৃঢ় ব্যক্তিত্ব, লড়াকু মনোভাব এসবই বহু তরুণকে অনুপ্রাণিত করে। তা শুধু খেলার ক্ষেত্রেই নয়; অনেকেই তাদের ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মাশরাফিকে অনুসরণ করেন, অনুকরণ করেন। এমন অনুকরণীয় ব্যক্তির জন্য আমাদের শুভ কামনা। ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফি আরো সাফল্য এনে দেবেন সেই অপেক্ষায় আমরা।