চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘মালয়েশিয়ার মার্কেটে শাকিবের চাহিদাই বেশী, দর্শক তাকেই চায়’

গেল বছরের নভেম্বরে খুব হাকডাক করে দেশের তারকা অভিনেতা শাকিব খান অভিনীত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘শিকারি’র উদ্বোধনী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল মালয়েশিয়ায়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অভিনেতা শাকিব খান, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং জাজের কর্ণধার আব্দুল আজিজসহ অনেকে। আর মালয়েশিয়ায় বাংলা সিনেমাকে পৌঁছে দেয়ার কাজটি করেছিলেন ‘এমবিসি ফিল্ম প্রোডাকশন মালয়েশিয়া’র কর্ণধার ও ডিস্ট্রিবিউটর রাফি মীর। দীর্ঘ এক বছর পর ফের মালয়েশিয়ায় বেশ কয়েকটি বাংলা সিনেমা মুক্তি দিতে যাচ্ছেন তিনি। চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় মালয়েশিয়ায় বাংলা সিনেমা ডিস্ট্রিবিউট বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন তিনি।

গত বছরে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রথমবার ‘শিকারি’ ছবির মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলা সিনেমা ডিস্ট্রিবিউটিং শুরু করেন রাফি মীর। ছবিটি সেসময় দেশের মাটিতে যেমন ব্যবসা করে, রাফি মীরের ভাষায়, মালয়েশিয়াতেও ছবিটি ‘সুপার হিট’ হয়। কিন্তু ‘শিকারি’ হিট হওয়ার পরও কেনো গত এক বছরে আর কোনো বাংলা চলচ্চিত্র মালয়েশিয়ায় প্রদর্শনের আয়োজন করলো ‘এমবিসি’?

মালয়েশিয়ায় গেল নভেম্বরে ‘শিকারি’ মুক্তির সময়...
মালয়েশিয়ায় গেল নভেম্বরে ‘শিকারি’ মুক্তির সময়…

এমন জিজ্ঞাসায় রাফি বলেন, গত নভেম্বরের ২৭ তারিখে ‘শিকারি’ ছবিটি আমরা মালয়েশিয়ার সিনেমা হলগুলোতে মুক্তি দেই। ছবিটি চলাকালীন সময়েই সেসময় সেখানে অবৈধ বাঙালি ধরাধরি হচ্ছিল। আর এই কারণেই আমরা মাঝখানে এতোদিন সেখানে কোনো বাংলা সিনেমা মুক্তি দেইনি। আমরা চাইনি যে সিনেমা দেখতে এসে কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়ুক। এজন্যই এক বছর আমরা সিনেমা চালাইনি। এখন সব ঠিকঠাক। ডিসেম্বরের ২ তারিখে কুয়ালালামপুরের জালান রাজা লাউট-এর চৌকিটে ফেডারেল সিনামায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘বসগিরি’।

শাকিবের ‘শিকারি’ দিয়েই আপনার ‘এমবিসি ফিল্ম প্রোডাকশন মালয়েশিয়া’ বাংলা চলচ্চিত্র ডিস্ট্রিবিউট শুরু করেছিল। দীর্ঘ এক বছর এই কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর ফের শাকিবের সিনেমা দিয়েই পুনর্যাত্রা কেন?-এমন প্রশ্নে রাফি বলেন, আমরা আসলে অবজার্ভ করি। দেখি এখানকার(মালয়েশিয়ায়) দর্শকের কোনটাতে আগ্রহ। তো সব মিলিয়ে দেখলাম যে শাকিবের সিনেমার প্রতি এখানকার বাঙালি দর্শকের সবচেয়ে বেশী আগ্রহ। তারা শাকিবের কোয়ালিটিফুল সিনেমাগুলোই দেখতে চায়। তাদের চাহিদা অনুযায়িই আসলে বাংলাদেশ থেকে আমরা সিনেমা নিয়ে আসি।

‘বসগিরি’র পর আর কোন কোন সিনেমা মালয়েশিয়ায় মুক্তি দিবেন, জানতে চাইলে রাফি মীর আরো জানান, এখানে সিনেমা হল পাওয়া খুব টাফ। চাইনিজ আর তামিল সিনেমার দখলে থাকে প্রায় সব সিনেমা হল। আসলে সবকিছুর মূলে এখন প্রচারণা কাজ করে। কোনো কোনো বাংলা সিনেমা হয়তো বাংলাদেশে খুব ভালো করছে, তারপরে সেই ছবিটা নিয়ে আমরা আগ্রহী হয়ে উঠি। তো বাংলা সিনেমা নিয়ে এরকম প্রচারণা লাগবে। প্রবাসী বাঙালি দর্শকের কাছে সেই সিনেমাটার খবর পৌঁছে দিতে হবে, যেনো মানুষ সিনেমা হলে গিয়ে দেখার আগ্রহটা পায়। তাহলে আমরাও নিয়মিত বাংলা সিনেমা দেশের বাইরে চালাতে পারবো। বসগিরি একটি সিনেমা হলে মুক্তি পেলেও শিগগির আরো কয়েকটি সিনেমা হলে মুক্তি দিতে পারবো।

‘এমবিসি ফিল্ম প্রোডাকশন মালয়েশিয়া’র কর্ণধার ও ডিস্ট্রিবিউটর রাফি মীর
‘এমবিসি ফিল্ম প্রোডাকশন মালয়েশিয়া’র কর্ণধার ও ডিস্ট্রিবিউটর রাফি মীর

‘বসগিরি’র পর মালয়েশিয়ায় শাকিব খানের ‘নবাব’ মুক্তি দিতে চান জানিয়ে রাফি বলেন, মালয়েশিয়ায় শাকিবের চাহিদা বেশী। দর্শক তাকেই বেশী চায়। আমরাও তাকে দিয়েই এখানে বাংলা সিনেমার ভালো একটা মার্কেট চালু করতে চাই। কারণ তার ছবি ছাড়া অন্য ছবির প্রতি এখানে বাঙালি দর্শকের আগ্রহ কম। যদিও আমরা প্রেমী ও প্রেমী, রক্ত এবং বস-২ ছবিগুলো নিয়ে এসেছি। এখনো সেন্সরে জমা দেইনি। তবে বসগিরি’র পর শাকিব খানের ‘নবাব’ চলবে মালয়েশিয়ায়। এরইমধ্যে বুধবারেই(২৯ নভেম্বর) নবাবের সেন্সর ছাড়পত্র হাতে পেয়েছি। আশা করছি এটা খুব ধুমধাম করে হলগুলোতে মুক্তি দিতে পারবো।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সিনেমার মতো বাংলা সিনেমাও সারা বিশ্বে নিজেদের মার্কেট গড়বে বলে বিশ্বাস করেন রাফি। তিনি মনে করেন,সেই দিন বেশী দূরে নয়, যেদিন বাংলা সিনেমাও প্রতি সপ্তাহে দেশের বাইরে নিয়মিত দেখানো হবে। তবে তারজন্য বাংলাদেশে কোয়ালিটিফুল ছবি নির্মাণ হওয়াকেই গুরুত্ব দিতে চান তিনি।