চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে। এর ফলে দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হলেন তিনি।

স্থানীয় সময় বুধবার রাতে প্রতিনিধি পরিষদে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে-বিপক্ষে প্রায় ১০ ঘণ্টা বিতর্কের পর ভোটাভুটি হয়। প্রথম অভিযোগে অভিশংসনের পক্ষে পড়ে ২৩০ ভোট, বিপক্ষে পড়ে ১৯৭ ভোট। আর দ্বিতীয় অভিযোগে অভিশংসনের পক্ষে পড়েছে ২২৯ ভোট ও বিপক্ষে ১৯৮ ভোট।

বিবিসি জানায়, এখন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ট্রাম্পকে অপসারণ করতে হলে এই প্রস্তাব কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটেও পাস হতে হবে। আগামী মাসে সেখানে প্রস্তাবটি আনা হতে পারে।

তবে নিশ্চিত করেই বলা যায়, এতে বাধ সাধবে সিনেট। কেননা ১০০ সদস্যের সিনেটে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৭ ভোট লাগবে। কিন্তু সেখানে ডেমোক্র্যাটদের আছে মাত্র ৪৭ ভোট।

ট্রাম্পের আগে প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন ও বিল ক্লিনটন। তবে তাদেরকে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়নি।

বুধবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যখন ভোটাভুটি চলছিল, তখন তিনি মিশিগানের ব্যাটল ক্রিকে একটি প্রচারণা সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন।

সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যখন মিশিগানের জন্য লড়াই করছি, নতুন কর্মসংস্থান করছি, তখন কংগ্রেসের কট্টর বামপন্থীরা ঘৃণা ও বিদ্বেষে পরিপূর্ণ হয়ে আছে, আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন কী ঘটছে সেখানে।’

প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হওয়ার পর এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানায়, সিনেট ট্রায়ালে এই অভিযোগ থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যে দুটি অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তার একটি ক্ষমতার অপব্যবহার। আরেকটি হলো মার্কিন কংগ্রেসের কাজে বাধাদান।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ২৫ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেসময় তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানান।

জো বাইডেন আগামী বছর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাইডেনের ছেলে ইউক্রেনের একটি জ্বালানি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখানেই কিছু অনিয়ম হয়, যেগুলো তদন্তের জন্য ট্রাম্প জেলেনস্কিকে চাপ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ট্রাম্প ইউক্রেনকে দেয়া সামরিক সহায়তা বন্ধেরও হুমকি দেন।

এরপরই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য জাতীয় স্বার্থকে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ডেমোক্র্যাটরা অভিশংসন তদন্ত প্রস্তাব আনেন।