সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন কবি ও মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ নিয়ে আসা হলে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সতীর্থ, ভক্ত আর শুভাকাঙ্খীরা। মৃত্যুর পরও নিজ কর্মে অনুপ্রেরণা হয়েই বেঁচে থাকবেন ভালোবাসার এই কবি।
কবি বলেছিলেন চলে যাবো সুতোর ওপারে, সবাইকে ছেড়ে ওপারেই চলে গেলেন কবি, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ।
বারডেম হাসপাতালের হিমঘর থেকে মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে আসার পর রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয় ভালোবাসার কবিকে।
শ্রদ্ধা জানাতে এসে অশ্রুসজল সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষও। আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ শ্রদ্ধা হলেও ভালোবাসার এ কবির প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থাকবে সারা জীবন।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক কবি রফিক আজাদকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘বিদায় তো নয়, ওঁকে স্বাগতম করছি অমর কবিদের সারিতে। কবির মৃত্যু হয় না; কবিতার মৃত্যু হয় না। কবির বয়স বাড়ে না; কবিতারও বয়স বাড়ে না।’
বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করেন প্রখ্যাত লোকশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। একইভাবে মুক্তিযুদ্ধে এবং বাংলা ভাষার উন্নয়নে রফিক আজাদের অবদান স্মরণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন অন্যান্যরা।
রণাঙ্গনের এ মুক্তিযোদ্ধা দ্রোহের আগুনে পুড়ে কবিতায় হয়েছেন বিপ্লবী। আবার ভালোবেসে হয়েছেন কোমল প্রেমিক। জীবনের সাথে যুক্ত হয়েছেন সুদৃঢ় ভাবে। সেই সাধের জীবন ফুরিয়ে যাওয়ায় হাহাকার থাকলেও তিনি থাকবেন অদৃশ্য শক্তি হয়ে।
রফিক আজাদের জন্য সবার কাছে দোয়া চান স্ত্রী দিলারা হাফিজ। কবির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে কবির মরদেহ রাখা হয় বাংলা একাডেমিতে। কবির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যলায়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয়েছে নামাজে জানাযা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ধানমন্ডি বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে অন্তিম শয্যায় শায়িত হবেন কবি রফিক আজাদ। তবে তিনি বারবার ফিরবেন তার কর্মে তার কবিতার অমর পঙক্তিমালায়। তার কবিতার মতোই তিনি থাকবেন চির তরুণ।