সুবিশাল এই পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ধরনের বিস্ময়কর বস্তু ও স্থান। যার বেশিরভাগ সম্পর্কেই আমরা খুব একটা জানি না। এর মধ্যে রয়েছে এমন কিছু জায়গা যার সৌন্দর্য কল্পনাকেও হার মানায়। যে স্থানগুলো তৈরি হয়েছে প্রকৃতির খেয়ালে; নিজ থেকেই। আজ পর্যন্তও সেসব স্থানের জন্ম রহস্যের ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারেনি।
এরকম ১০টি মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক বিস্ময়কর স্থান নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের এবারের আয়োজন।
১. তুরস্কের পামুক্কালে: এই অসাধারণ সুন্দর স্থানের ছবিটি কোনো শিল্পী আঁকা নয়। এটি তুরস্কের পামুক্কালে যার অর্থ তুলার দুর্গ। দেশটির দক্ষিণ অংশের ডেনিজলি প্রদেশে অবস্থিত। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিভাবে তৈরি গরম পানির ঝর্ণা। যার তাপমাত্রা প্রাকৃতিকভাবেই উষ্ণ।
২. ব্লেইজের গ্রেট ব্লু হোল: সুইমিং পুলের মতো দেখা গেলেও এটি কিন্তু মানুষের তৈরি নয়। ব্লেইজের প্রায় ৩০০ মিটার জায়গা জুড়ে ও ১২৫ মিটার গভীর এই প্রাকৃতিক গর্তটি ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের একটি। ব্রিটিশ ডাইভার ও লেখক নেড মিডেলটনের লেখা ‘টেন ইয়ারস আন্ডার ওয়াটার’ বইয়ের থেকে ‘দি গ্রেট ব্লু হোল’ নামটি এসেছে। এই জায়গাটির পানি এতটাই স্বচ্ছ যে পানির নিচে বহুদূর পর্যন্ত সব কিছুই দেখা যায়। স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য জায়গাটি বিখ্যাত।
৩. ক্রোয়েশিয়ার প্লিটভাইসার সিন: এখানে ১৬টি লেক একটির পর একটি ছোট ছোট ঝর্ণা দিয়ে যেন এক সারিতে সাজানো। মনে হবে কাজটি প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে করা হয়েছে। কিন্তু তা পুরোপুরি প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের একটি স্থান। ক্রোয়েশিয়ার প্লিটভািইসার সিনে গিয়ে আপনি এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। পারবেন নৌকায় করে ঘুরতেও।
৪. চীনের জ্যাংগে ড্যানেক্সিয়া: অদ্ভুত রকমের কাজ করা এই লাল পাহাড়ের অবস্থান চীনে। এটি পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর জায়গা। পাহাড়ের লালচে ভাব পর্যটকদের ভীষণ আকর্ষণ করে।
৫. অ্যান্টার্কটিকার স্ট্রিপড আইসবার্গ: বরফখন্ড আমরা মূলত সাদা রঙেই দেখে থাকি। কিন্তু সৌন্দর্যের আরেকটি উদাহরণ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে এই বরফখন্ড সেজেছে সাদা নীলের স্ট্রাইপে। এরকম মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে হলে যেতে হবে এটি অ্যান্টার্কটিকার স্ট্রিপড আইসবার্গে।
৬. তুর্কেমেনিস্তানের দ্য ডোর টু হেল: প্রায় ৪০ বছর ধরে এই স্থানটি জ্বলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এখানেও কিছুটা কীর্তি রয়েছে জিওলজিস্টদের। তারা ড্রিলিংয়ের জন্য কাজ করতে গিয়ে এই প্রাকৃতিক গ্যাস ফিন্ডে আগুন ধরে যায়। তখন থেকে এখনো এটি জ্বলেই চলেছে।
৭. ফ্রান্সের কোট ডে আলবাটরে: শ্বেত-শুভ্র এই সমুদ্র সৈকত প্রায় ৮০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত। এর উচ্চতা প্রায় ১০০ মিটার। যা ফ্রান্সের কোট ডে আলবাটরে নামে পরিচিত। ফ্রান্সে গেলে প্রায় সবাই এই জায়গায় ঘুরতে আসেন।
৮. যুক্তরাষ্ট্রের ব্রেইস ক্যানিয়ন: সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ২০০০ মিটার উঁচু এই অদ্ভুত ধরণের পিরামিডের মতো পাথুরে স্তম্ভগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ব্রেইস ক্যানিয়ন নামে পরিচিত। প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এখানে বহু পর্যটক দেশ-বিদেশ থেকে আসেন।
৯. বলিভিয়ার সালার দে ইউয়ানি: পৃথিবীর সবচাইতে বড় লবণাক্ত লেক বলিভিয়ার সালার দে ইউয়ানি। এটি প্রায় ১০ হাজার ৫৮২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এটি বিশ্বের সবচাইতে বড় আয়না হিসেবেও পরিচিত।
১০. যুক্তরাষ্ট্রের নেভেদার ফ্লাই গেয়েসার: বিস্ময়কর এ স্থানটি যুক্তরাষ্ট্রের নেভেদার ফ্লাই গেয়েসার। ১৯৬৪ সালে ড্রিলিংয়ের সময় আকস্মিক দুর্ঘটনায় জিওথারমাল এনার্জির কারণে মিনারেলস উপরে উঠে এটি তৈরি হয়েছিলো বলা হয়ে থাকে। যদিও দুর্ঘটনার মাধ্যমে তৈরি, তারপরও এর উপরে উঠে যাওয়া মিলারেলস ও স্ট্রাকচার তৈরি করা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে।