চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মানহীন ছবি করে নিজের ইমেজ নষ্ট করতে চাইনা: রেসি

একাধিক ব্যবসা সফল ছবির নায়িকা রেসি। বিশেষ করে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের সঙ্গে জুটি বেঁধে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন এই নায়িকা। সর্বশেষ রেসি অভিনীত ‘নিয়তি’ ও ‘শূন্য’ নামের দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। বর্তমানে রেসি কোনো সিনেমায় কাজ করছেন না। নিজেকে বন্দি রেখেছেন স্বামী, সন্তান ও সংসার এই তিন ‘স’-তে। এই অভিনেত্রী কথা বললেন চ্যানেল আই অনলালাইনের সঙ্গে…

অনেকদিন আপনাকে কোনো সিনেমায় পাওয়া যাচ্ছেনা…
আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন তো! সিনেমা কী হচ্ছে আদৌ? যা হচ্ছে সব সিনেমা কী চলছে? শেষ কবে কোন সিনেমা ব্যবসা সফল হয়েছে? শাকিবের সব ছবিগুলো কী টাকা উঠেছে? প্রযোজক কী তার প্রাপ্য টাকা তুলতে পারছে? আমার জানা মতে, পারেনি। চলচ্চিত্রে আমার অনুপস্থিতির আরেকটা কারণ হচ্ছে, আমি যে টাইপের ছবি করেছি, তেমন ছবি এখন নির্মাণ হচ্ছে না। যখন নিয়মিত কাজ করেছি, তখন আমার একটা ইমেজ তৈরি হয়েছে। এখন মানহীন ছবি করে আমার ইমেজটা নষ্ট করতে চাইনা। দেখা গেল, আমি একটা ছবি করলাম। কিন্তু ভালো হলো না। এতে কিন্তু আমার ভাবমূর্তি নষ্ট। তাই করছি না।

তাহলে কী আর ছবি করবেন না?
অবশ্যই করবো। তবে, টাকার জন্য সিনেমা করবো না। যদি করি, একান্তই নিজের ইচ্ছাতেই কাজ করবো। ভালো কাজ করবো। ভালো পরিচালক, গল্প, চরিত্র, প্রযোজক পেলে কাজ করবো। কারণ আমার রক্তের মধ্যে অভিনয় মিশে আছে। শুধু সিনেমা কেন, নাটক কিংবা টেলিফিল্মও করতে পারি। আমি দেখেছি এখনকার নাটক-টেলিফিল্মগুলো খুব ভালো হচ্ছে। ইউটিউব থেকে ঈদের অনেক নাটক দেখেছি।

স্বামী ও দুই মেয়ের সাথে চিত্রনায়িকা রেসি

২০০৪-২০১২ সাল পর্যন্ত দাপিয়ে কাজ করেছেন। এই সময়ে আপনার ৪৮ টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। দিনগুলো মিস করেন?
মনে পড়লে খুব কষ্ট লাগে। এফডিসির প্রতিটি ফ্লোরে সেসময় শুটিং হতো। রেগুলার কাজ করতাম। আমরা পুরো পরিবারের মতো ছিলাম সবাই। কিন্তু এখন এফডিসির ফ্লোরগুলো ফাঁকা পড়ে থাকে। শুটিং হলেও খুব কম। দুদিন আগে একটি বেসরকারি চ্যানেলে আমন্ত্রণে অতিথি হিসেবে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখা হয়েছিল এফডিসির একজন মেকআপ আর্টিস্টের সঙ্গে। সে বলছিল, টেলিভিশনে চাকরি না করলে না খেয়ে থাকতে হতো। কারণ, সিনেমায় কাজ নেই। শুনে আমার খুবই খারাপ লেগেছে।

আপনার বিপরীতে বেশিরভাগ ছবিতে ডিপজলকে দেখা যেতো। এর কারণ কী?
মান্না ভাই, শাকিব খান, ইমন, নিরবসহ অনেকের সাথেই আমি কাজ করেছি। তবে ডিপজল ভাইয়ের বিপরীতে আমার অভিনীত প্রায় সব ছবি ব্যবসা সফল। তাছাড়া আমি নিজেকে পারিবারিক গল্প নির্ভর ছবিতে উপস্থাপন করতে সবসময় পছন্দ করি। তার প্রায় সব ছবি নির্মাণও হতো পারিবারিক ক্লাইমেক্স নির্ভর যেটা দর্শকরাও গ্রহণ করতেন এবং আমারো ভালো লাগতো। তাই হয়তো বা তার সাথে আমার অভিনীত কাজের সংখ্যা একটু বেশি।

চলচ্চিত্রে তো এখন নানা বিভাজন…
হুম ঠিক। বিভাজন থেকে বেরিয়ে আসতে হলে একতা খুব জরুরী। একে তো চলচ্চিত্রে মন্দা বিরাজ করছে, তার উপর যদি বিভাজন, রেষারেষি হয় তাহলে ফিল্মের আরো অধঃপতন হবে। যারা নিয়মিত ছবি বানাতেন তারা নেই। বেশিরভাগ প্রযোজক নতুন। তারা সিনেমার কিছু বোঝে না। ছবি তৈরি করে লোকসান নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। পুরাতন প্রযোজকদের আবার সিনেমায় ফিরে আসতে হবে। সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে।

মানহীন ছবি বাড়ছে। দর্শক ছবি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। দায়ী কারা?
প্রথমে এর জন্য দায়ী ভালো গল্পের ছবি তৈরি হচ্ছেনা। এরপর সিনেমা হলের পরিবেশ ভালো না। অনেকে ভালোভাবে ছবি বানাতে পারছেন না। সব শিল্পীদের ঠিমমতো ব্যবহার করা হচ্ছে না।

বাসায় আপনার দিন কাটে কীভাবে?
আমার দুই কন্যা সন্তান। বড় মেয়েকে এবার প্লে’তে ভর্তি করিয়েছি। তাকে স্কুলে দেয়া-নেয়া করি। দুজনকে সামলাতে দিন যে কখন চলে যায় বুঝতেই পারি না। এছাড়া আমার অনেকদিন আগের একটা প্ল্যান নিয়ে কাজ করছি। এখন ওটাতেই বেশি সময় দিচ্ছি, প্রায় গুছিয়ে এনেছি।

কী সেটা?
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একমাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব। আমার অনেকদিনের ইচ্ছে পূরণ হতে যাচ্ছে। ফিল্ম করার আগে থেকেই আমার এই ইচ্ছে ছিল। আগামীতে আমি নিজের মতো এটা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চাই। এর বেশি এখন কিছু জানাতে চাইনা।

ছবি: নায়িকার ফেসবুক থেকে সংগৃহিত