দুই নারীকে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে তাদের দুই শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পানে বিরত রাখার ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার ওসি ও এক এসআইকে সদর থানা থেকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটক রাখার ঘটনা তদন্ত করে আগামি ৮ মে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পুলিশের আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মাদারীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহাতাব হাইকোর্ট হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদনের পর আদালত আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তাপস কুমার বিশ্বাস।
দুধের দুই শিশুকে মায়ের কোল থেকে বাইরে রেখে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটক রাখার ঘটনায় করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২১ মার্চ বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ মাদারীপুর সদর থানার ওসি ও এক এসআইকে তলব করেন হাইকোর্ট। তাদেরকে ২৯ মার্চ স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে একটি রিট আবেদন করেন।
রিটকারী আইনজীবী রানা কাওসার সাংবাদিকদের জানান, ‘গত ১২ মার্চ, রোববার সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি লক্ষীগঞ্জ এলাকার বিরোধপূর্ণ জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান।
কিন্তু পনির মামলার বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানান। এতে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে চড় দেয়। এক পর্যায়ে পনির পুলিশের সাথে বাক-বিতাণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ফলে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।
এ সময় পনির ও তার বড়ভাই এবং বোনের ঘরে মূল্যবান আসবাবপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্রসহ রান্নার চুলাও ভেঙ্গে ফেলে। এক পর্যায়ে পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আকলিমা বেগমকে টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
তখন ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।’