মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে সরকার নির্বিচারে মানুষ হত্যা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে প্রতিবাদী নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা আছে তাদের কাছে আছে। তাহলে এই অভিযান আগে থেকে চালিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেননি কেন? কারণ হলো এই মাদকব্যবসায় তাদের নেতৃবৃন্দ জড়িত। এরই মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করেছে তারা। আর এখন তাদের নেতাদের আড়াল করতে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে। ১৭ দিনে ৫৮ জন মানুষ মারা গেছে। মানুষের জীবনের কী কোনো মূল্য নেই?
তিনি বলেন, আমরা চাই মাদক নির্মূল করা হোক। কিন্তু মানুষ মেরে নয়। তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। যাদেরক হত্যা করা হচ্ছে এরা তো মালিক না। এরা তো বাহক। তারা বিক্রি করে মালিককেই দেয়। সেই মালিক কারা? তারা এই সরকারের মদদপুষ্ট। মাদক ব্যবসা উচ্ছেদ হোক। কিন্তু মানুষকে হত্যা করা যাবে না।
মওদুদ আশংকা করে বলেন, এর মাধ্যমে বিরোধী দলকে উচ্ছেদ করতে চায় সরকার। কিছু দিনের মধ্যেই দেখবেন বিরোধী দলের নেতাদের বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যা শুরু করবে।
নির্বাচন বিষয়ে মওদুদ বলেন, খুলনায় জনগণের নির্বাচন হয়নি। পুলিশি নির্বাচন হয়েছে। খুলনায় প্রায় ১০০ কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। এখন তারা খুলনা স্টাইলে গাজীপুরেও নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তারা যদি সে চেষ্টা করে এবার আমরাও দেখবে তারা কিভাবে করে। আমরাও সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবো।
নির্বাচনী প্রচারণায় এমপিরা অংশ নেয়ার বিষয়ে যে আইন ইসি সুপারিশ করেছে তার সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, একটি তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন। সরকার যা চাইবে তাই করবে।। আচরণবিধি পরিবর্তন করছে। এখন সংসদ সদস্য প্রচারণা চালাতে পারবে। সংসদ সদস্য মানে তো আওয়ামী লীগের। সেখানেতো কোনো বিরোধী দলের সদস্য সদস্য নেই। এটি দূরভিসন্ধিমূলক। তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি করেছে। তারা সংসদ রেখে আগামী নির্বাচন করতে চায়। তাই এই নিয়ম রেখেছে। আচরণবিধি পরিবর্তন করা ষড়যন্ত্রের অংশ। এটি তারা এই জন্য করেছে ভবিষ্যত নির্বাচনে এমপিরা যেন সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নিজের প্রচারণা চালাতে পারে। এভাবে হলে তো আমার পক্ষেও নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তি বিষয়ে মওদুদ বলেন, সর্বোচ্চ আদালত জামিন দেয়ার পর কি আর কোনো কথা থাকে? যদি কয়েকটি মামলা থেকেও থাকে, তাহলে দুয়েকদিনের মধ্যেই তার জামিন হয়ে যায়। কিন্তু হবে না। নিম্ন আদালতের বিচারকরা সরকার যা চাইবে তা করবে। নির্বাচন কমিশনও তাই করে। তবে তারা এটা জানে যে, একদিন বেশিও যদি খালেদা জিয়া কারাগারে থাকেন তাহলে তার জনপ্রিয়তা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।
এসময় মওদুদ আইন আদালত ও শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় মন্তব্য করে বলেন, আন্দোলন ছাড়া জনগণের দাবি কোনোভাবে আদায় করা যায় না। রমজান মাসের পরে আমাদেরকে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে।।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর বিষয়ে মওদুদ বলেন, আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ফিরবেন না। আমরা আশা করি তিনি তিস্তার পানি চুক্তি বাস্তবায়ন করেই ফিরবেন। আর না হলে আমরা বলবো তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন।