চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মাদকের ‘ভিন্ন জগৎ’কেও ধ্বংস করতে হবে

চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে নেমে একটা ‘ভিন্ন জগৎ’ পাওয়ার কথা বলেছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র‌্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তার মতে, মাদকের গডফাদার নামে দুই-একজন ব্যক্তিকে নিয়ে গণমাধ্যমে মাতামাতি চলে। কিন্তু মূল মাদক ব্যবসা চালায় অন্য লোকেরা। সেই ব্যক্তিদের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব

শনিবার রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সেখানে মাদকবিরোধী অভিযানের নানা বিষয় তুলে ধরেন র‌্যাব প্রধান। জানান, অনেক অপরিচিত লোকজনের অভিনব সব কায়দায় ইয়াবা পাচারের কথা।

আমরা জানি, এক সময় ভারত থেকে পাচার হয়ে এদেশে ফেনসিডিল আসত। সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত ফেনসিডিলের বহু কারখানায় শুধু বাংলাদেশের পাঠানোর জন্যই তা তৈরি হতো। অথচ ভারতের কেউ মাদক হিসেবে সেই ফেনসিডিল খেত না। ঠিক তেমনিভাবে  মিয়ানমার থেকে এখন আসছে ইয়াবা। কিন্তু সেখানের মানুষ ইয়াবা খায় না।

এর মানে দাঁড়াচ্ছে, মিয়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে এই নেশা বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অসংখ্যবার এ নিয়ে বাংলাদেশ তাদের সাথে কথা বলেছে; কিন্তু মিয়ানমার কোনোভাবেই ইয়াবা তৈরির কারখানাগুলো বন্ধ করেনি। নানা কৌশলে তারা ইয়াবা পাঠাচ্ছে বাংলাদেশে।

এমন জটিল বাস্তবতার মুখে দাঁড়িয়ে যে মাদকবিরোধী অভিযান সারাদেশে শুরুর হয়, তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের কারণে লাখ লাখ মাদকসেবী মাদক ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই এখন স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে। যদিও এই অভিযানে নিহত ব্যক্তিদের কারো কারো নিয়ে প্রশ্ন ছিল; তারা আদৌ মাদক ব্যবসায়ী কি না? তারপরও জনগণ এই অভিযানের পক্ষে তাদের অবস্থান জানিয়েছে।

এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশে ইয়াবা আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। খুচরা বিক্রেতাদের বড় অংশকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি বড় বড় ডিলার হিসেবে যারা পরিচিত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও সফলতা পেয়েছে। তবে উৎপাদকদের ইয়াবা পাঠানোর পথ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারেনি সরকার। বছরে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার এ ব্যবসা কয়েক মাসে বন্ধ হবে না-সেটাই স্বাভাবিক।

আমরা মনে করি, এমন অভিযান চলমান থাকলে এবং সমাজে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতার পাশাপাশি ব্যাপকভাবে প্রতিরোধ গড়তে পারলে অবশ্যই মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।