চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মাত্র ৪২ টাকায় সাড়ে ৯শ’ সেতু পরিদর্শন!

দেশের ভেতরেই এক শহর থেকে আরেক শহরে বেড়াতে হলে অনেকগুলো টাকা চলে যায়। অন্য যে কোনো এলাকার চেয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তো খরচ আরও বেশি। আর যদি চান দেশের বাইরে যেতে, তাহলে তো অনেকদিন আগে থেকেই খরচের হিসাব করতে হয়, তা সে যত অল্প ঘোরাঘুরিই হোক না কেন।

কিন্তু ভারতে বেড়ানোর এমন এক সুযোগ আছে, যার সম্পর্কে বাইরের কেউই জানে না। হিমালয় অঞ্চলে ১শ’ মাইলের সেই রেলযাত্রায় নানা মনোরম দৃশ্যের পাশাপাশি আপনি দেখতে পারবেন নানা রকম সাড়ে ৯শ’ সুসজ্জিত সেতু।

অথচ পুরো যাত্রাটিতে খরচ পড়বে মাত্র ৩৫ ভারতীয় রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার এখনকার মূল্যমান মাত্র ৪২ টাকার মতো!

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের পাঠানকোট থেকে হিমাচল প্রদেশের জগিন্দর নগরে টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রায় যাত্রীদের আনানেয়া করে কংগ্রা ভ্যালি রেলওয়ে। খুবই ধীরগতির এই ট্রিপে পর্যটকরা ওঠেন কদাচিৎ। প্রচার না থাকায় দূরপাল্লার এই ট্রিপটির খবর বাইরের প্রায় কেউই জানেন না। তাই তারা খবরও রাখেন না ১০ ঘণ্টার ওই যাত্রাপথে হিমালয় অঞ্চলের ধলাধর পর্বতমালার কী চোখ ধাঁধানো দৃশ্য দেখা যায়।

পুরনো আমলের একটি ট্রেনটি সমতল থেকে প্রায় ৪ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে পাহাড়ি পথে চলাচল করে এবং যাত্রাবিরতি করে মোট ৩৩টি নির্ধারিত স্টপেজে। বিস্ময়কয় হলেও সত্যি – এর মাঝে ট্রেনটি মোট সাড়ে ৯শ’টি অলঙ্কৃত সেতু পার হয়!

বিশ্বাস হচ্ছে? ৯৫০টি বড় সেতু!!!

তার সঙ্গে দু’দিকে গাঢ় সবুজ বনানীতে ঘেরা চোখ জুড়ানো মন ভরানো প্রাকৃতিক দৃশ্য তো আছেই। আরও আছে পাহাড়-পর্বতের গায়ে থাকা মন্দিরসহ নানা রঙ-বেরঙের স্থাপনা। তার সঙ্গে আবার দূর থেকে নীলচে ধূসর উঁচু উঁচু পাহাড়ের হাতছানি।

পার্বত্য এলাকার উপত্যকাগুলোতে আছে পাহাড়ি ঝিরি ও লেক। দীর্ঘ রেলযাত্রায় দেখবেন সেগুলোও।

পাঠানকোট থেকে জগিন্দর নগরে একই দূরত্ব সড়কপথে যেতে সময় লাগে মাত্র ৪ ঘণ্টা। তাই সময়ের ব্যাপারটা যারা চিন্তা করেন তারা কংগ্রা ভ্যালি রুটের ট্রেনে করে ১০ ঘণ্টায় ভ্রমণ করতে চান না। এ কারণেই বেশিরভাগ পর্যটক অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য মণ্ডিত এই ট্রেন ভ্রমণটি সম্পর্কে জানেন না।

আমজনতার জন্য লোকাল রুটের ট্রিপ হওয়ায় ট্রেনটি ঝকঝকে নয়। ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানায়, লোকাল হওয়ায় অগ্রীম টিকিটও বুকিং দেয়া যায় না। তাই মাঝে মাঝেই মনের মতো সিট পেতে একটু ঝক্কি পোহাতে হয়।

১৯২৯ সালে চালু হওয়া কংগ্রা ভ্যালি রেলওয়ে ভারতে বর্তমানে চালু থাকা মাত্র ৫টি ন্যারো-গেজ পাহাড়ি রেলওয়ের একটি। একে ‘টয় ট্রেন’ও বলা হয়।