চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সর্বত্র মাতৃভাষার ব্যবহারে শক্ত পদক্ষেপ নিন

বছর ঘুরে আবার এলো ভাষা আন্দোলনের মাস। ভাষার অধিকার আদায়ের মাস। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া মায়ের ভাষা অর্জনের মাসে চিরাচরিত নিয়মেই থাকছে নানা আয়োজন। যে আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি পুরো মাসজুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন, সেইসব ভাষা শহীদদের প্রতি। আমরা জানি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার দাবিতে ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে নেমেছিল সেদিনের ভাষাযোদ্ধারা। সেদিন পাকিস্তান সরকারে নির্দেশে পুলিশের চালানো গুলিতে প্রাণ হারান আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ বেশ কয়েকজন। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫৪ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত মাতৃভাষা অর্জনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়নি সেই আন্দোলন। বরং পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটেছে। ভাষা শহীদদের সেই রক্তে রচিত হয়েছে স্বাধীনতার জয়গান, এসেছে সার্বভৌম বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল সেই অধ্যায় পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিও। ভাষার মাসের শুরুর দিনেই সূচনা হবে এ মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞও। তা হলো বাংলা একাডেমিতে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শুধু বইমেলাই নয়; এ মাসে বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে এসব কিছুর পরেও ভাষার মাসে আরেকটি বিষয় আলোচনায় উঠে আসে তা হলো, বাংলা ভাষার বিকৃতি। আমরা দেখি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, এফএম রেডিওতে ভাষার বিকৃত উচ্চারণ। এমনকি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও আমরা লক্ষ্য করি ভাষা প্রতি চরম অবহেলা। সেখানে ভুল বানান আর ভাষার বিকৃতি হচ্ছে ভয়ানকভাবে। তাই আমরা মনেকরি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ এবং শুদ্ধ ব্যবহারে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে আইন করে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রেও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি..’ আমরা যেন এই আবেদন কোনোভাবেই ভুলে না যাই।