১০ বছরে প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। এ কারণে মারাত্মক এই রোগ আবার মহামারী আকারে ফিরে আসতে পারে- এমন আতঙ্কে রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাই ম্যালেরিয়ার সঙ্গে লড়তে আরও বেশি অর্থ দেয়ার জন্য লন্ডনে কমনওয়েলথ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি সমাজসেবক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি বিল গেটস।
২০১৬ সালের হিসাব তুলে ধরে এ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা। বলেন, ওই বছর বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই ছিল ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে। ২০১৬-তে ৯১ টি দেশে ২১ কোটি ৬০ লাখ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের ঘটনা পাওয়া গিয়েছিল। যা ২০১৫ সালের তুলনায় ৫০ লাখ বেশি।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বাড়তি বিনিয়োগ আর কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা আরও অনেক বাড়তে পারে।
আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, প্রশান্তের পশ্চিমাঞ্চল ও আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য অনেক অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ হয় স্থিতিশীল আছে, নইলে কমছে।
বর্তমানে এক্ষেত্রে বড় একটা সমস্যা হলো, ম্যালেরিয়া জ্বরের সংক্রমণ ও ছড়ানোর জন্য দায়ী মশা এবং জীবাণু উভয়েই এদের সঙ্গে লড়তে ব্যবহৃত মশানাশক এবং অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল ওষুধের প্রতি সহনশীল হয়ে উঠেছে। তাই ভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও ওষুধ তৈরি এখন খুব বেশি প্রয়োজন।
তবে নতুন চিকিৎসা বাজারে আনার কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। ‘মসকিউরিক্স’ নামের একটি নতুন প্রতিষেধক আফ্রিকার কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় ছোট শিশুদের রক্ষায় পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আফ্রিকাতেই বিশ্বের ৯০ শতাংশ ম্যালেরিয়া সংক্রমণ এবং ৯১ শতাংশ ম্যালেরিয়াজনিত মৃত্যু ঘটে।
তবে এসব প্রতিষেধক ও চিকিৎসার উন্নয়ন এবং প্রসারের জন্য আরও অনেক বেশি সময় ও অর্থবরাদ্দ প্রয়োজন। অথচ বৈশ্বিকভাবে ম্যালেরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে বরাদ্দ খুব একটা বাড়েনি।
বিশেষজ্ঞদের হিসেব অনুসারে, আগামী পাঁচ বছরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অঙ্গীকার অন্তত কমনওয়েলথভুক্ত অঞ্চলগুলোতে অন্তত সাড়ে ৬ লাখ জীবন বাঁচাতে পারবে।