যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মশাবাহিত একটি মারাত্মক রোগ দেখা দিয়েছে, যার প্রাদুর্ভাব ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ইস্টার্ন ইকুইন এনসেফালাইটিস (ইইই) নামের এই ভাইরাসটি মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটায়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্ক ফুলে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফ্লোরিডার অরেঞ্জ কাউন্টিতে অবস্থিত স্বাস্থ্য বিভাগ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের পরীক্ষাধীন মুরগিগুলোর মধ্যে অনেকগুলোর দেহেই ইইই জীবাণু পাওয়া গেছে। এই জীবাণু মশার মাধ্যমে খুব সহজেই মানবদেহেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে মূলত কোনো এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব নির্ণয়ের জন্য মুরগি ব্যবহার করা হয়। যেসব এলাকায় মশা বেশি, সেসব এলাকায় আলাদা খাঁচার তৈরি করে বেশ কিছু মোরগ-মুরগি লালনপালন করা হয়। এর কিছুদিন পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পরপর তাদের দেহ থেকে রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করা হয় ওই এলাকার মশার কামড়ে বিশেষ কোনো জীবাণু ছড়াচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য।
সাধারণত ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস এবং ইইই’র সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য এভাবে মুরগি ব্যবহার করা হয়। এর সুবিধা হলো, কোনো এলাকায় মশার কামড় থেকে এসব ভাইরাস মুরগির দেহ আক্রমণ করলে তা রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত করা যায় ঠিকই, কিন্তু এতে মুরগির দেহে ভাইরাসের কোনো প্রভাব পড়ে না।
অরেঞ্জ কাউন্টিতে ইইই ভাইরাসে আক্রান্ত মুরগির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে গেছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ফ্লোরিডা স্বাস্থ্য বিভাগ। এর ফলে জীবাণুটির মানবদেহে সংক্রমণের আশঙ্কা আগের চেয়ে অনেকখানিই বেড়ে গেছে বলে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে মাত্র ৭টি করে ইইই আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যায়। আক্রান্তের সংখ্যা এখনো কম হলেও রোগটি মারাত্মক। ইইই’তে আক্রান্ত রোগীর ৩০ শতাংশই মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মারা যায়।
মশার কামড়ে জীবাণু দেহে প্রবেশের ৪ থেকে ১০ দিন পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয়। এ রোগের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে: হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা, কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর এবং বমি। সংক্রমণ গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীনতা, খিঁচুনি হতে পারে। এমনকি রোগী কোমায়ও চলে যেতে পারে।