চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মশলাদার ছবিগুলো আমার রান্নাঘরে চুলা ধরায়: আদিল হুসেইন

‘পরীক্ষা’ এবং ‘নির্বাণ ইন’ চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য সমালোচকদের প্রশংসায় ভাসছেন আদিল হুসেইন। সম্প্রতি তিনি কথা বলেছেন ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাথে। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার কলকাতার সাথে সংযোগ, ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা সহ নানা বিষয়:

মনে হচ্ছে ভিন্ন ধারার ছবিই বলিউডের নতুন মূলধারা হয়ে উঠেছে…
হ্যাঁ, ভারতীয়রা এখন ভালো কন্টেন্ট দেখতে চান। তবে এরকম আরও অনেক ছবি তৈরি করা উচিত। আমি মনে করি যেই পরিবর্তনটা এসেছে, এটার আরো দীর্ঘ পথ পারি দেয়া বাকি। ভারতের দর্শকের স্বাদ একেক এলাকায় একেক রকম। একটা ভালো কন্টেন্ট নিয়ে সব এলাকার দর্শকের মন পেতে প্রোডাকশন হাউজের প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। কন্টেন্ট ভিত্তিক ছবি বলিউডে কম নির্মাণ করা হয়, বাইরে বেশি হয়। এদেশের যেসব ছবিতে ভিন্ন ধারার বলা হয়, সেগুলোই ওসব দেশে মূল ধারার ছবি।

আপনার অনেক ভক্তই আপনাকে ‘ফোর্স টু’ বা ‘কমান্ডো টু’ এর মত মশলাদার ছবিতে দেখতে চান না…
প্রত্যেক ভক্ত যদি আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০০ রুপি করে প্রতি মাসে জমা দেন, তাহলে আমি এই ছবিগুলোতে অভিনয় করবো না। মজা করলাম! এই ছবিগুলো আমার রান্নাঘরে চুলা ধরায় এবং এগুলোর কারণেই ‘সানরাইজ’ ও ‘হোটেল সালভাশন’-এর মতো কম পারিশ্রমিকের ছবিতে কাজ করার সাহস পাই। আমারও তো বিল পরিশোধ করতে হয়।

অভিনেতা আদিল নাকি শিক্ষক আদিল- কোনটি আপনার হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের?
আমি যখন শিক্ষক, তখন আমার মনে হয় অন্যের জন্য কিছু করছি। আমি যখন অভিনেতা, তখন আমার মনে হয় নিজের জন্য কিছু করছি। শিক্ষকতা করে আরও একটু বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া গেলে শেখাতে আরও বেশি ভালো লাগতো।

বিদ্যা, শ্রীদেবী, টাবু- তিন মেধাবী অভিনেত্রীর সঙ্গেই কাজ করেছেন। আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ কে?
তারা সবাই অসাধারণ। তাদের সবার সঙ্গেই বার বার কাজ করার সুযোগ পেতে চাই।

আপনি কলকাতার সন্তান হিসেবে পরিচিত। জানেন এটা?
আসামের গোয়ালপাড়ায় জন্ম নিয়েছি এবং বেড়ে উঠেছি। সেখানে সবাই বাংলা বোঝে। আমি বাঙালি কালচারটা খুব কাছ থেকে জেনেছি। দেশ, শুকতারার মতো বাঙালি ম্যাগাজিন পড়ে বড় হয়েছি। পড়েছি দীপক চ্যাটার্জির গোয়েন্দা গল্প। এই প্রসঙ্গে মনে হলো, কেউ দীপক চ্যাটার্জির গল্প নিয়ে সিনেমা বানায় না কেন?

কলকাতা প্রসঙ্গে ফিরে আসি। মনে হচ্ছে কলকাতাকে খুব ভালোবাসেন তাই না?
কলকাতায় প্রথম গিয়েছিলাম ১৯৭৫ সালে। নাটক দেখতে আসতাম। স্বপন মিত্র, উৎপল দত্তের নাটক দেখেছি। কলকাতা আমার মাঝে সুপ্ত থাকা অভিনেতাকে জাগিয়ে তুলেছে। এটি দেশের একমাত্র শহর যেটি ছন্দ ধরে রেখেছে। এই শহরের সুন্দর পুরনো বিল্ডিংগুলো শিগগির ভেঙ্গে পড়বে, শহর পরিণত হবে কংক্রিট জঙ্গলে। এই শহরের সাথে আবেগ জড়িয়ে আছে, ‘আমাদের কলকাতা’ বলতে ভালো লাগে। বাইরের থেকে আসা মানুষকেও আপন করে নেয় এই শহর। দিল্লী কিংবা মুম্বাইতে কাউকে কোনো ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে তারা ঠিক মতো সাড়া দেন না। কিন্তু কলকাতায় জিজ্ঞেস করলে কোন পথে গেলে ভালো হবে, খরচ কম পড়বে, সেটা পর্যন্ত বলে দেয়া হয়। এটাই কলকাতা!