চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মরণ সাগর পারে যারা অমর বাংলাদেশ কি তাদের পথে?

কারাগারকে বলা হয় কয়েদীদের নিরাপদ আশ্রয়। কারও প্রতি বিরাগের বশবর্তী হয়ে কারাগারে গুলি করে হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই বললেই চলে। কিন্তু এমন বিরল একটি কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। ১৯৭৫ সাল। ১৫ আগস্টে সপরিবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৩ নভেম্বর জেলখানায় ঢুকে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠীর কবল থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ বিরোধীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিশ্বাসঘাতক এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মূল ভয় ছিল জাতীয় চার নেতাকে ঘিরে। ঘাতকরা যখন জাতীয় চার নেতাকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে নিতে ব্যর্থ হয়, তখনই বেছে নেয় এই ঘৃণ্য পথ। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যার পর পাল্টে দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাভাবিক গতিপথ। এরপর বলতে গেলে এখনও পুরোপুরি সঠিক পথে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। জাতির জনকসহ জাতীয় নেতাদের হারিয়ে দেশের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- এখন যদি বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জাতীয় চার নেতার নাম জিজ্ঞেস করা হয়, অনেকেই চারজনের নাম পুরোপুরি বলতে পারে না! এটা অবশ্য একদিনে হয়নি। তাদেরকে হত্যার পর থেকে পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে তাদের দূরে রাখার অপচেষ্টা করা হয়েছে। তাই এখন তাদের আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া আমাদের জাতীয় জীবনের অন্যতম প্রধান ব্রত হওয়া উচিৎ। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও দেশবিরোধী শক্তির সাথে কোন ধরণের আপোষ না করে তারা দেশপ্রেমের উজ্জ্বল উদাহরণ হয়েছেন। বিশ্ব ইতিহাসেও রাজনৈতিক নেতৃত্বের এমন দেশপ্রেমের উদাহরণ বিরল ঘটনা। শুধু বাংলাদেশ নয়, তারা সারাবিশ্বেই হতে পারেন দেশপ্রেমের রোল মডেল। এখন তাদের আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে বৈশ্বিক পরিসরে তাদের অবদানের বিষয় তুলে ধরতে হবে। এজন্য সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে আমরা আহ্বান করছি। একইসঙ্গে ব্যক্তি পর্যায়ে যে যার অবস্থান থেকেও জাতীয় চার নেতার আদর্শ ছড়িয়ে দিতে পারেন। আমাদের সবাইকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই নির্মমতার শিকার জাতীয় চার নেতার প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো হবে। জাতীয় চার নেতাকে হারানোর এই বেদনার ক্ষণে তাদের স্মৃতির প্রতি রইলো আমাদের অতল শ্রদ্ধা।