অর্থমন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের টানাটানানিতে পড়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন, প্রবাসীরা সরাসরি কম খরচে ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠাতে না পারায় ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের দাবি, ৯৫ শতাংশ মূলধন দিলেও তাদের ব্যাংকের উপর অধিকার মানতে নারাজ অর্থমন্ত্রণালয়।
বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবকদের সহায়তা, দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের কর্মসংস্থানে ঋণ প্রদান, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত কম খরচে সহজে রেমিট্যান্স পাঠাতে সহায়তা দিতে বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে ২০১০ সালে কার্যক্রম শুরু করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। ৫ বছর চলে গেছে।
অথচ এখনো রেমিট্যান্স আনতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি ব্যাংকটি।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন অনুসারে তাদের ব্যাংকটি শিডিউল ব্যাংক নয়। তাই স্বাভাবিক ভাবে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন না তারা। ফলে বিদেশ থেকে সরাসরি এই ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারছেন না গ্রাহক। এমনকি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মূল শাখাটিকে নিকাশঘর বা ক্লিয়ারিং হাউজ হিসেবে ব্যবহারেরও অনুমতি দেয়া হয়নি, যা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মুলধন নিয়ে ব্যাংক শুরু হয় যার ৯৫ শতাংশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আনার্স বোর্ডের। বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে হলে অনুমোদিত মুলধন হতে হবে ৪০০ কোটি টাকা। চেয়ারম্যান কে হবেন এ নিয়ে বিরোধে বাকী টাকার ৯৫ শতাংশ দিতে রাজী নয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ’৯৫ কোটি টাকা দিয়েছি সেটাই আসলে বেশি’। যেহেতু ব্যাংকের কোনো বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা নেই, চেয়ারম্যানশিপও হবে না তাহলে ৪’শ কোটি টাকা কেনো গুনবে তার মন্ত্রণালয় বলেও প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রণালয়ের মুল অভিযোগ অর্থমন্ত্রনালয়ের ব্যাংক ও প্রবিধি বিভাগের দিকে।বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে অননুমতি দিতে মুল বাধা আইন বলে দাবি অর্থমন্ত্রণালয়ের।
অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিষয়টি শুধু চেয়ারম্যান পদ নিয়ে তা নয়। যেহেতু পুঁজির বড় একটি অংশ দিবেন তারা সেহেতু সেখানে কর্তৃত্ব নয় তাদের একটি ব্যাপার তো থাকবেই। তবে কর্তৃত্ব যেমন অর্থমন্ত্রণালয়ের নেই তেমনি তাদেরও নেই। কারণ কর্তৃত্ব সরকারের বানিজ্যিক কার্যক্রম চালানোর বাধা দূর করে সহজে কম খরচে রেমিট্যান্স আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে কাজে লাগানোর দাবি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের।