মেরিলিন মনরো ও জো ডিম্যাজিওর সংসার জীবন ছিল মাত্র নয় মাসের। তবুও জো ডিম্যাজিওর মতো করে হয়তো মেরিলিন মনরোকে কেউ ভালোবাসেনি। আর তাই মনরোর মৃত্যুর পরেও জো ডিম্যাজিও যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন সপ্তাহে তিনবার ছয়টি গোলাপ দিয়ে গেছেন অভিনেত্রীর সমাধিতে।
একবার মেরিলিন তার দ্বিতীয় স্বামী জো ডিম্যাজিওকে প্রতিজ্ঞা করান, তিনি মারা যাওয়ার পর জো ডিম্যাজিও যেন প্রতি সপ্তাহে মনরোর কবরে ফুল দেন। জো ডিম্যাজিও তার প্রতিজ্ঞা রেখেছিলেন। ২০ বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে মেরিলিন মনরোর কবরে আধ ডজন গোলাপ রেখে আসতেন তিনি। যতদিন জো ডিম্যাজিও বেঁচে ছিলেন, ততদিন ভালোবেসে মেরিলিনকে দেয়া কথা রেখেছেন।
১৯৫৪ সালের জানুয়ারি মাসে বেসবল খেলোয়াড় জো ডিম্যাজিওর সঙ্গে বিয়ে হয় মনরোর। বিয়ের পর মেরিলিন মনরোর সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে থাকতেন জো ডিম্যাজিও। ছিলেন ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইটস’ ছবির সেই বিখ্যাত ফ্রক উড়ে যাওয়ার দৃশ্যের শুটিংয়েও। সেই শুটিং নিয়ে আপত্তি জানান জো ডিম্যাজিও। তার কয়েকমাস পর মেরিলিন তালাকের আবেদন করেন। আবেদনে জানান জো ডিম্যাজিও অনেক নিষ্ঠুর মানসিকতার একজন পুরুষ। মতের মিলের অভাবে বিচ্ছেদ হয়ে যায় এই জুটির।
তবে মেরিলিনের জন্য জো ডিম্যাজিওর ভালোবাসা ছিল বিশুদ্ধ। আর তাই বিচ্ছেদের বেশ কয়েক বছর পরে মেরিলিন মনরো যখন ১৯৬১ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন জো ডিম্যাজিও পাশে ছিলেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সাবেক স্বামীকে মনরো ‘হিরো’ বলেছিলেন।
মেরিলিন-কেনেডি’র অন্তরঙ্গতা যখন মিডিয়াতে ফলাও করে প্রকাশ হতে থাকে, তখনও ডিম্যাজিও মেরিলিন’কে অনুরোধ করেছিলেন তাকে আবার বিয়ে করতে। কারণ, তিনি জানতেন কেনেডি মেরিলিনকে ব্যবহার করছেন। মেরিলিন নিজেও জো ডিম্যাজিওর প্রস্তাবে সম্মত হতে মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন জো ডিম্যাগিওর মতো কোনো পুরুষ তাকে এত ভালোবাসেনি। কিন্তু তার আগেই অকাল মৃত্যু হয় তার।
মেরিলিন মনরোর মৃত্যুর খবর শুনে নিউ ইয়র্ক থেকে বিমানে লস আঞ্জেলসে আসেন জো ডিম্যাজিও। ছোট পরিসরে মেরিলিনের শেষকৃত্যের আয়োজন করেন। এমনকি সমাধির ফলকটিও তার ডিজাইন করা। মেরিলিনের মৃত্যুতে ভীষণ ভেঙ্গে পড়েছিলেন জো ডিম্যাজিও।
১৯৯৯ সালে মৃত্যু হয় জো ডিম্যাজিওর। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মেরিলিন মনরোকে ভুলতে পারেননি। এমনকি মৃত্যুশয্যায় তিনি বলেছিলেন, ‘অবশেষে মেরিলিনকে আবার দেখবো!’ -কইমই