মংলা থেকে পাকশী পর্যন্ত নৌপথটি সচল রাখতে ড্রেজিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার এনইসি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক বৈঠকে এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালামাল আনা নেওয়া করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদি এই প্রকল্পটি শেষ হলে মংলা বন্দর থেকে চাঁদপুর, মাওয়া, গোয়ালন্দ হয়ে পাকশী পর্যন্ত পণ্য পরিবহনও সহজ হবে। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া শেওলা, ভোমরা, রামগড় এবং বেনাপোল বন্দরের অবকঠামোগত উন্নয়নসহ ৮ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১৭১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ৫৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
বৈঠকশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আন্তর্জাতিক সীমারেখায় অবস্থিত শেওলা, ভোমরা, রামগড় এবং বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি নিয়মিত পর্যটক চলাচল করে থাকে। এ কারণে এই চার স্থলবন্দরের সক্ষমতা ও নিরাপত্তা বাড়াতে অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট, শেওলা, ভোমরা, রামগড় স্থল বন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শেওলা, ভোমরা, রামগড় ও বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। এতে ৬৯৩ কোটি টাকা ব্যয় হবে, যার মধ্যে বিশ্বব্যাংক প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ৫৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় করবে। বাকী ১০০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা পাওয়া যাবে সরকারি তহবিল থেকে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ দু’দেশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন সব নদী যৌথভাবে খননের বিষয়ে দু’দেশের সরকারের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। এতে যে খরচ হবে, তার ৭০ শতাংশ ভারত সরকার এবং ৩০ শতাংশ অর্থব্যয় করবে বাংলাদেশ এমন আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও এটি চূড়ান্ত হয়নি। যৌথ নদীগুলো ভারত থেকে এদেশে পলি বহন করে নিয়ে আসার কারণে খরচের বড় অংশ ভারতকে বহনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন অথচ এখনও অসম্পন্ন রয়ে গেছে, সেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। জামালপুর-ধানুয়া কামালপুর- কদমতলা (রৌমারী) জেলা মহাসড়ক প্রশস্থকরণ ও মজবুতিকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
এছাড়া টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর ও ভুঞাপুর উপজেলাধীন যমুনা নদীর বামতীরবর্তী কাউলীবাড়ী ব্রীজ হতে শাখারিয়া পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে চাঁদপুর জেলার হরিণা ফেরিঘাট এবং চরভৈরবী এলাকার কাটাখাল বাজার রক্ষা প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সিলেট টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।