সংবাদ পত্রে খবর বেরোলো,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে ৪ কোটি টাকা মূল্যমানের জমি সরকারি খাতে দান করলেন নেত্রকোনা ৪ আসনের এমপি রেবেকা মমিন৷ তিনি মোহনগঞ্জের দানবীর খ্যাত মরহুম আব্দুল আজিজ খান সাহেবের পুত্রবধূ ও সাবেক খাদ্য, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী মরহুম আব্দুল মমিন খান সাহেবের সহধর্মিণী৷ মোহনগঞ্জ-মদন-খালিয়াজুরী এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোনা ৪ আসনটি৷ জনাবা রেবেকা মমিন এম পি তার ব্যক্তিগত সম্পদের ১৬৪ শতাংশ জমি সরকারি খাতে লিখে দিয়ে এক অনন্য নজীর স্থাপন করলেন৷বিভিন্ন সংবাদ পত্র ও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ খবর প্রচারিত হচ্ছে৷
যেদেশে অহরহ সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ সংবাদ পত্রের শিরোনাম হয় সেদেশে স্বেচ্ছায় জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে সরকারি খাতে দান খুবই ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় একটি খবরই বটে৷
এই পরিবারের আরও বহুবিধ অবদান রয়েছে৷ মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারী উচ্চবিদ্যালয়,কলেজ,রেল স্টেশন, মসজিদসহ আরও বহুবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে রেবেকা মমিনের পরিবারের অবদান রয়েছে৷ অনুসন্ধানে জানা গেছে রেবেকা মমিনের পরিবার এ পর্যন্ত ৩০০ কোটি টাকা মূল্যমানের সম্পত্তি জনকল্যাণে দান করেছেন৷যার সুফল ভোগ করছে দলমত নির্বিশেষে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ৷
নিম্নে তার বিবরণ দেয়া হলো- মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজ ৫ একর।
পাইলট হাই স্কুল খেলার মাঠ সহ ১০ একর।
সাবরেজিস্ট্রি অফিস ০.৩৩ একর।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ – ০.১৮ একর।
মোহনগঞ্জ মডেল মসজিদ ০.৫০ একর।
মোহনগঞ্জ পৌরসভা ০.৩৫ একর।
মোহনগঞ্জ ঈদগাহ মাঠ ১.৫ একর।
কাজিয়াটি গোরস্থান ০.৭০ একর।
কাজিয়াটি সরকারি প্রাঃবিঃ ০.২০ একর।
মোহনগঞ্জ বড় মসজিদ জামিয়া কাছেমিয়া মাদ্রাসা ( হাট মোহনগঞ্জ) ০.১০ একর।
মোহনগঞ্জ রেল স্টেশন ৫ একর।সর্বশেষ
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রস্তাবিত আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১.৬৪ একর।
তাদের জনহিতকর কাজের ধারাবাহিকতায় মোহনগঞ্জের গৃহহীন মানুষের গৃহায়ণ সুবিধার লক্ষ্যে এই অবদানসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভূমিকা মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসিত হয়ে চলছে৷দেশব্যাপী অনেক এমপিরা নেগেটিভ ভাবে সংবাদ পত্রের শিরোনাম হয়৷তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ভুমিদস্যুতা ও দখলদারিত্বের৷ অনেক সাংসদের সম্পদ বাড়ে কিন্তু রেবেকা মমিনের সম্পদ কমেছে৷ অথচ তিনি তিন তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন৷ সাদামাটা জীবন যাপনের অধিকারী রেবেকা মমিনের বিরুদ্ধে কখনো ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠেনি৷ তিনি দলীয় বিভাজনের অবসান ঘটিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি কাছে টেনে নিয়েছেন একসময় গ্রুপিং দ্বন্দ্বে দূরে থাকা কর্মীবান্ধব ও জনবান্ধব জননেতা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও দুইবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইকবালকে৷ তিনি কাছে টেনে নিয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল হান্নান রতনসহ ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান বৃন্দ ও আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে৷
তবে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব সাজ্জাদুল হাসানের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লতিফুর রহমান রতনের নেতৃত্বে একটি খণ্ডিত অংশ উনার বিপক্ষে রয়েছেন৷ কিন্তু লতিফুর রহমান রতন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন রেবেকা মমিনের সমর্থন পুষ্ট হয়েই৷ লোকজন বলাবলি করছে কত এমপির বিরুদ্ধে রয়েছে ভূমিদস্যূতা ও দখলদারিত্বের অভিযোগ৷ তারা সম্পত্তি দখল করে আর তিনি দান করে চলছেন৷ সরকারি টাকায় উন্নয়ন আর ব্যক্তিগত সম্পত্তি সরকারী খাতে উন্নয়নের ভূমিকা কি এক? সরকারি টাকার উন্নয়ন হলো জনগণের অধিকার৷ এগুলোতে বাহবা দেয়ার কিছু নেই৷ রেবেকা মমিন সাংসদ হিসাবে সরকারি টাকার উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন আবার ব্যক্তিগত সম্পত্তি দান করেও ভূমিকা রাখছেন৷
কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পত্তি সরকারি খাতে দান করা নিশ্চয়ই বাহবা পাওয়ার বিষয়৷ রেবেকা মমিন পরিবার দান করে নিজেদের নাম প্রচারের বিষয়েও আগ্রহী নন৷ না হয় তারা মোহন গনজ পাইলট হাইস্কুল,মোহন গঞ্জ সরকারি কলেজ কিংবা আশ্রয়ণ প্রকল্পের নাম নিজেদের নামে করতে পারতেন৷ কিন্তু তারা তা করেননি৷ করছেন এলাকার নামে ও বঙ্গবন্ধুর নামে৷ এ নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ দল মত নির্বিশেষে সকলই অভিনন্দন জানাচ্ছে তাকে৷ শুধু কি তাই?রেবেকা মমিনের ঘর ভাড়া নিয়ে যারা ব্যবসা করে তারাও পায় বিশেষ সুবিধা৷ বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও ভাড়া বাড়াননা তিনি৷তিন তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েও ঢাকায় কোন বাড়ি কিনতে পারেননি তিনি৷থাকেন ভাড়া বাসায় ৷ এলাকাতেও করেননি নতুন কোন বাড়ি৷ স্বামীসূত্রে প্রাপ্ত টিনশেড পুরনো বাড়িটিতেই থাকেন ৷এমপি হওয়ার পরে সম্পত্তি কেনার বদলে তিনি বিক্রি করে যাচ্ছেন৷ তার এই ব্যতিক্রমী জীবন যাপন এখন মানুষের মুখে মুখে৷ এই ভূমিদস্যূতা ও দখলদারিত্বের যুগে এমপি রেবেকা মমিন হয়ে উঠলেন একজন ব্যতিক্রমী সাংসদ৷তিনি হয়ে উঠলেন দখলদারিত্ব ও ভুমিদস্যুতার বিরুদ্ধে এক অনন্য নজির৷
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)