তিউনিসিয়া উপকূলে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের নিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকায় বেশিরভাগ আরোহীই বাংলাদেশি ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে।
লিবিয়ার জুয়ারা থেকে অভিবাসীদের নৌকাটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রওনা হয়। কিন্তু শক্তিশালী ঢেউয়ের কবলে পড়ে সেটি গভীর রাতে তিউনিসিয়া উপকূলে এসে ডুবে যায়।
নৌকাডুবিতে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিউনিসিয়া রেড ক্রিসেন্টের বরাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি।
ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস নিশ্চিত করেছে, নিহত ৬৫ জনের মধ্যে ৩৭ জন বাংলাদেশের নাগরিক।
দূতাবাস সূত্র থেকে জানানো হয়, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে ৫ জন অসুস্থ অবস্থায় তিউনিসিয়ায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। জীবিত উদ্ধার হওয়া সবাইকে রেড ক্রিসেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন’র (আইওএম) যৌথ ব্যবস্থাপনায় আপাতত আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট জানায়, বৃহস্পতিবার লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী নিয়ে একটি বড় নৌকা ইটালির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। গভীর সাগরে যাওয়ার পর তাদেরকে বড় নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোটো একটি নৌকায় তোলা হয়। সেটিতে আরও অনেকে ছিল।
নৌকাটিতে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ তোলার কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়।
তিউনিসিয়ার জেলেরা নৌবাহিনীর সহায়তায় ১৬ জনকে উদ্ধার করে শনিবার সকালে জারযিজ শহরের তীরে নিয়ে যায়। উদ্ধার হওয়াদের ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জনই বাংলাদেশি। এদের মধ্যে একজন কিশোরও রয়েছে।
বেঁচে ফেরা অভিবাসীদের ভাষ্যমতে, নৌকাটিতে ৫১জন বাংলাদেশি ছাড়াও ৩জন মিশরীয় এবং মরক্কো, শাদ এবং আফ্রিকার অন্যান্য কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিল।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসেব অনুসারে, ২০১৯ সালের প্রথম চার মাসে লিবিয়া ও ইউরোপের মধ্যকার নৌপথে ১৬৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী নিহত হয়েছে। এবারের নৌকাডুবির ঘটনাটিকে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে মারাত্মক নৌকাডুবি বলে মনে করা হচ্ছে।
আইওএম-ও একে চলতি বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ নৌকাডুবি বলে মন্তব্য করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে গত ৮ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেব অনুসারে, এ সময়ের মধ্যে ভূমধ্যসাগরে অন্তত ৪৪৩ জন অভিবাসী হয় মারা গেছে না হয় নিখোঁজ হয়েছে। ২০১৮ সালে সংখ্যাটি ছিল ২ হাজার ২৯৯ এবং ২০১৭ সালে ৩ হাজার ১৩৯।