৩৩ মামলায় কারাগারে থাকা ‘ভুল আসামি’ পাটকল শ্রমিক জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, মামলার বাদী, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে জাহালমের গ্রেপ্তারের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতিনিধি ও আইন সচিবের প্রতিনিধিকে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় সশরীরে হাইকোর্টে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে সোমবার দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’
শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সে প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত।
এরপর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাঁকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না…আমি নির্দোষ।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম। যিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক। যার কারাবাসের তিন বছর পূর্ণ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি। একটি মামলায় জামিন হয়েছে জাহালমের। তবে আরো ৩২টি মামলায় জামিন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।
দুদক বলছে, জাহালম নিরপরাধ প্রমাণিত। আর তদন্ত করে একই মত দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।