বৈশাখ উদযাপনের বিষফোঁড়া হয়ে ওঠা ভুভুজেলার বিকট শব্দ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা এলাকার মোড়ে মোড়ে মোতায়েন পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। রাস্তাগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় রাজপথ ধরেই হাঁটা যাচ্ছে। এমন নির্ঝঞ্ঝাট পরিবেশে বৈশাখের অনুষ্ঠানগুলো উপভোগ করছেন নগরবাসী।
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে বড় আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা ছাড়াও লোকজ ঐতিহ্যকে ধারণ করে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানমালা।
সকাল নয়টার পরপরই চারুকলা অনুষদের মূল ফটকের সামনে থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সব শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল মোড় ঘুর টিএসসি হয়ে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়।
ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের বটতলায় সংগীত বিভাগের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। খেলাঘরের আয়োজনে আমতলায় চলে বৈশাখের অনুষ্ঠানমালা। ডাকসুর মূল ফটক এবং পূর্ব পাশে অনুষ্ঠান আয়োজন করে টিএসসি ভিত্তিক দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
মল চত্ত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজন করেছে বৈশাখী কনসার্ট। দুপুর থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলা এ কনসার্টে মঞ্চ মাতাবেন জেমস, কণাসহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ব্যান্ড।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও শিশুপার্কের সামনে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজন করেছে লোকজ সংগীতানুষ্ঠান। এতে সহযোগিতা করছে চ্যানেল আই।
অনেকটা মুক্ত পরিবেশে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে মনের আনন্দেই নববর্ষ পালন করা যাচ্ছে বলে জানান নগরবাসী।
রমনা পার্কে কথা হয় এমদাদুল হক নামে একজনের সঙ্গে। তাদের যৌথ পরিবারের আট সদস্যের সবাই এসেছেন বৈশাখের অনুষ্ঠানমালা উপভোগ করতে।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: ‘এ বছর এই এলাকার পরিবেশ আমাদের কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ভুভুজেলার বিকট শব্দ নেই, হকার বা ভিক্ষুকের যন্ত্রণা নেই, নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনাও দেখলাম খুব ভালো। পরিবার নিয়ে মনের আনন্দেই কাটছে বৈশাখ।’
বাংলামোটর থেকে স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে এসেছেন নাজমুল। তার কথায় ফুটে ওঠে স্বস্তি। বলেন, ‘প্রতিবছরই বৈশাখ উঠলে নানা কথা ছড়ায় নিরাপত্তা নিয়ে। তাই মনে এক ধরনের ভয় থাকে। কিন্তু এ বছর বৈশাখের আয়োজন দেখে আমি সন্তুষ্ট।’
প্রভাতে ছায়ানটের অনুষ্ঠান দিয়ে রমনা বটমূলে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান বিকেল পাঁচটার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে।