যথাযোগ্য মর্যাদা এবং বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটিতে জাতীয় সংগীত সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত, আলোচনা এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ভিয়েতনামে কোভিড-১৯ মহামারীর সতর্কতার জন্য এবং জনসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দিবসটি স্বল্প সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারবর্গ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চকে স্মরণ করে আলোচনাপর্বে রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন পাকিস্তানী শাষক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতার সাথে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন, তা ছিল বাঙ্গালী জাতির মুক্তির সনদ-স্বাধীনতার উদাত্ত আহবান। মহা-সংগ্রামী এ নেতার নেতৃত্বে আপামর জনতা সে সময় মুক্তি সংগ্রামে সংঘবদ্ধ হয়েছিল। তাই ৭ মার্চ ১৯৭১এর ভাষণ পুরো বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতার যে উদাত্ত আহবান জানিয়েছিলো – তারই ফলস্বরূপ আমাদের স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু এবং সে সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কো শুধু বঙ্গবন্ধুকেই সম্মান জানায়নি বরং বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর উদ্দীপ্ত ও প্রেরণা প্রদানকারী ভাষণ নতুন প্রজন্মের জন্য এক মাইলফলক হিসেবে সর্বদাই বিরাজমান থাকবে। আজ সারা পৃথিবীতে এ অবিস্মরণীয় ভাষণের মর্মবাণী বিভিন্ন জাতির জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টি এবং গবেষণার বিষয়বস্তুুতে পরিণত হয়েছে ।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর সন্ধিক্ষণে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে জাতির পিতার ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্যে সকল বাংলাদেশিরা একযোগে কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পরিশেষে ৭ই মার্চের ভাষণের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, মহান এ ভাষণের কপি আগত অতিথীদের মধ্যে বিতরণ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ধন্যবাদ ও আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয় ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাস বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ভাষণের ভিয়েতনামী অনুবাদের কাজে হাত দিয়েছে এবং এ উপলক্ষ্যে শীঘ্রই একটি ‘ভিয়েতনামী’ প্রকাশনা সম্পন্ন করে বঙ্গন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে-‘মুজিব বর্ষে’ শ্রদ্ধা জানানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।