খুশি বেগম। বয়স ৪৮। টাঙ্গাইল শহরের শিমুলতলিতে ভাড়া বাসায় থাকেন। উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম অন্যের বাড়িতে কাজ করা। ভাড়া দিতে দেরি হওয়ায় এমন একজন অসহায় মধ্যবয়সী নারীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বাসার মালিকের বিরুদ্ধে।
পেটানোয় আহত হয়ে খুশি বেগম হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতেও আতঙ্কিত। বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিরাপত্তাহীনতা মনে করছেন ওই নারী। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
খুশি বেগম অভিযোগ করেন, টাঙ্গাইল শহরের শিমুলতলী এলাকায় বাসা ভাড়া দিতে দেরি হওয়ায় ভাড়াটিয়া খুশি বেগমকে (৪৮) বেধড়ক পেটালেন বাসার মালিক রনি, তার ভাই রুবেল, বোন চাদনী, রনির স্ত্রী শিউলী।
বুধবার বিকেলে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে রনি ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বেদড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন খুশি বেগম।
খুশি বেগম আরও জানান, শহরের শিমুলতলী মান্নান উকিলের বাসায় খুশি বেগম, সাজেদা বেগমসহ চার মহিলা বাসা ভাড়া করে থাকতেন। গত তিন মাস আগে সাজেদা বেগমসহ দুজন পালিয়ে যায়। পরে খুশি বেগমের বাসা ভাড়া দিতে কষ্ট হওয়ায় মান্নান উকিলের বাসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত মাসে বাসা ছেড়ে দেওয়ার সময় খুশি বেগমের কাছে বাসা ভাড়া দাবি করেন রনি। তিন হাজার টাকা মধ্যে দুই
হাজার টাকা পরিশোধ করেন খুশি। বাকি এক হাজার টাকার পরিবর্তে খুশি বেগমের টিভি রেখে দেন রনি। টাকা দিয়ে টিভি নেওয়ার কথা জানায় খুশিকে।
গত বুধবার খুশি বেগম রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ভাড়ার অবশিষ্ট টাকা দাবি করেন রনি। টাকা দিতে না পারায় রনিসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে চুল ধরে টেনে হিচড়ে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। কক্ষের দরজা বন্ধ করে খুশি বেগমকে বেধড়ক পেটায় তিনি।
এসময় খুশি বেগমের কাছে থাকা দুই হাজার টাকা ও দুটি কানের দুল খুলে নেন রনির পরিবারের সদস্যরা। পরে খুশি বেগম কাঁদতে কাঁদতে থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার সনদ আনতে পাঠায়। হাসপাতাল থেকে খুশি বেগম সনদ আনার সময় তার হাতে থাকা সনদ ছিনিয়ে নেয় রনিসহ ৭/৮ জন লোক। তারপরও কৌশলে হাসপাতালের নার্সের সহযোগিতায় কিছু ঔষধ লিখে নিয়ে চলে আসেন।
এ ব্যাপারে খুশি বেগম বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত রনি বলেন, খুশির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি এসব অভিনয় করছেন। আমি তাকে ডেকে ভাড়ার কথা জিজ্ঞেস করেছি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ বলেন, বিষয়টি আইন বহির্ভুত। আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি। ভাড়ার টাকার জন্য একজন নারীকে মারধর করা কোনভাবেই উচিৎ হয়নি।