‘অসাধারণ। সময়োপযোগী ভাবনা থেকে নাটক। নাটক তো এরকমই হওয়া দরকার। ধন্যবাদ পরিচালককে এরকম একটি বিষয় বাছাই করার জন্য। প্রতিটা জায়গাতেই এই মানুষরূপি অমানুষ আছে। এদের মুখোশ উন্মোচন করে মেয়েদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।’
-ঈদ আয়োজনে চ্যানেল আইয়ের বিশেষ টেলিফিল্ম ‘#মি টু’ দেখে চ্যানেল আইয়ের ইউটিউবে এভাবেই এক দর্শক তার প্রতিক্রিয়া জানালেন। তবে হতাশ হয়েছেন, এরকম ভালো গল্পের নাটকের ভিউ সংখ্যা দেখে!
স্বপ্নীল রাজীব নামের একজনতো সরাসরি মন্তব্য ই করে বসলেন, বুঝি না এতো ভালো নাটকের ভিউ এতো কম কেন?
ঈদুল আযহার অনুষ্ঠানমালায় ঈদের ৬ষ্ঠ দিন বিকালে চ্যানেল আইয়ে প্রচার হয় নারীর রুখে দাঁড়ানোর গল্প নিয়ে নির্মিত সাজ্জাদ সুমনের পরিচালিত টেলিছবি ‘#মি টু’। চ্যানেলে প্রচারের পর এটি চ্যানেল আইয়ের ইউটিউবেও প্রকাশ পায়।
টেলিছবিটি দেখে বহু দর্শক তাদের ভালো লাগার কথা মন্তব্যের ঘরে জানাচ্ছেন। একজন ‘#মি টু’র গল্প দেখে সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত নুসরাত হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতের সাথেও রিলেট করেছেন। তিনি লিখেন, ‘#মি টু’ দেখছি আর শুধু নুসরাত রাফির কথা ভাবছি। এমন অনেক টিচার আছে যার জন্য হাজারো নুসরাতের জীবন নষ্ট হয়ে গেছে, কেউ প্রকাশ করছে কেউ করেনি। যে সকল শিক্ষক মুখে মিষ্টি কথা বলে তারা গোপনে এমন কিছুই করে। এই নাটকে অনেক কিছু শেখার আছে।
সমাজে সব বয়সী নারীরা প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষাক্ষেত্র থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত সবখানে অনিরাপদ নারী। কোনো না কোনোভাবে মন্দ পুরুষের লালসার শিকার হচ্ছেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে উত্তাল হয়েছিল হলিউড-বলিউড। যৌন নির্যাতন বিরোধী যে আন্দোলনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগে ‘মিটু মুভমেন্ট’ নামে ছড়িয়ে গিয়েছিলে বিশ্বব্যাপী। দাপুটে নির্মাতা, প্রযোজক ও অভিনেতার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে আঙুল তুলেছিলেন বহু অভিনেত্রী। যার আঁচ কিছুটা হলেও লেগেছিলো বাংলাদেশে। আর সেই মুভমেন্ট নিয়েই টেলিছবি ‘#মি টু’।
১৯৫২ এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে এ টেলিফিল্মটি নির্মাণ করেছেন সাজ্জাদ সুমন। এর গল্প লিখেছেন মেজবাহ উদ্দিন সুমন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, লুৎফুর রহমান জর্জ, সুজাত শিমুল প্রমুখ।
নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে চলমান যে প্রতিবাদ, তা নিয়েই এই টেলিছবি। যা দেখে অন্তত কোনো মেয়ে যেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া হয়রানির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারে, বিচারের জন্য আওয়াজ তুলতে পারে ঠিক এ কারণেই ‘#মি টু’ নাটকে কাজ করেছেন বলে জানান অভিনেত্রী তিশা।
নির্মাতা সাজ্জাদ সুমন জানান, সমাজে নারীরা বিভিন্নভাবে হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছেন। পত্রিকার পাতা খুললেই ধর্ষণ, হয়রানির খবর পাই। এসব থেকে বাঁচতে স্ব স্ব ক্ষেত্রে নারীদের রুখে দাঁড়ানোর গল্পই হচ্ছে ‘#মি টু’।