ব্যভিচার বা পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রীম কোর্ট। এই রায়ের মাধ্যমে ১৫৮ বছর আগের করা আইন বাতিল ঘোষণা করা হলো।
রায়ের পর্যবেক্ষণ বলা হয়েছে, এই আইন স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। যা নারীদের স্বাধীনতা খর্ব করে। স্বামী কখনই স্ত্রীর প্রভূ বা মালিক হতে পারেন না।
ব্রিটিশ আমলের ওই আইনে ছিল, কোনো পুরুষ যদি কোনো বিবাহিত নারীর সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর অনুমতি ছাড়া যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন, তাহলে তিনি ফৌজদারী অপরাধে অপরাধী। এই অপরাধে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান ছিল।
এই আইনের বিরুদ্ধে পিটিশন দায়েরকারী আইনের চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এই আইন বিধিবহির্ভূত এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টিকারী।
উপনিবেশিক যুগের এই আইনটি চলতি মাসে সুপ্রীম কোর্ট স্থগিত করে দেয়। ব্যভিচার বিষয়ে রায় পাঠের সময় প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, ডিভোর্সের মতো নাগরিক সমস্যার কারণ হওয়া এই বিষয়টি কোনো ফৌজদারি অপরাধ নয়।
গত অগাস্টে ইটালিতে বসবাসকারী ৪১ বছর বয়সী ব্যবসায়ী জোসেফ শিনে এই আইনটি বাতিলের জন্য পিটিশন দায়ের করেন সুপ্রীম কোর্টে।
সেই পিটিশনে বলা হয়, ব্যভিচারে অভিযুক্ত হওয়ার জন্য বিবাহিত মেয়েরা কোনো বিশেষ বিষয় নয়। তারা কোনোভাবেই কোনো পুরুষের থেকে ভিন্ন নয়।
শিনে আরো বলেন, এই আইন পরোক্ষভাবে সেই বৈষম্যও প্রকট করে যে, নারীরা পুরুষের সম্পদ।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এই পিটিশনের বিরোধিতা করে বলেছেন, ব্যভিচার ফৌজদারী অপরাধ থাকা উচিত। ব্যভিচার আইনের দূষণ বিয়ের পবিত্রতা নষ্ট করবে।
‘ব্যভিচারকে বৈধ করে ফেললে সেটা বিয়ের বন্ধনকে আরো ঝামেলায় ফেলবে। এক সরকারি আইনজীবী আদালতকে এসব কথা বলে যোগ করেন, ভারতীয় তত্ত্ব বিয়ের পবিত্রতাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।’
আইনটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সেখানে কুকর্মে সহযোগিতা করার জন্য নারীর কোনো দায় ছিলো না বরং প্রলোভোনকারী হিসেবে পুরুষ অভিযুক্ত হতো। নারীরা ব্যভিচারী স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করতে পারতো না। এই অপরাধে অভিযুক্ত পুরুষের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার বিধান ছিলো, হতে পারতো জরিমানা অথবা দুটোই।