চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ভারতের কর্ণাটকে হিজাব পরা ছাত্রীদের পাঠানো হলো আলাদা শ্রেণিকক্ষে

হিজাব আন্দোলনের কয়েকদিন পর ভারতের কর্ণাটকের একটি কলেজে হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের কলেজে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও তাদের পৃথক শ্রেণিকক্ষে কোনো পাঠদান ছাড়া বসিয়ে রাখা হয়।

উদিপি জেলার কুন্দাপুরের সরকারি জুনিয়র পিইউ স্কুলে আজ সকালে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

এর মধ্যে হিজাব আন্দোলনে ধারালো অস্ত্র বহনকারী রজব (৪১) এবং আবদুল মজিদ (৩২) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের ছাত্রীদের আন্দোলনের অংশ নয় বলেও ধারণা করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের একজন হত্যাচেষ্টাসহ, অস্ত্র এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র মামলার পূর্বের অভিযুক্ত অপরাধী বলে জানায় উদিপির এডিশনাল এসপি সিদ্দালিঙ্গপ্পা।

তিনি জানান, মামলাটি তদন্তাধীন আছে। শুক্রবার আন্দোলনের বাইরে ৫ জনের একটি গ্রুপকে দেখা যায়, যার মধ্যে দু’জনকে আটক করা হয়েছে আজ, পুলিশ বাকি ৩ জনকে খুঁজার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।

কর্ণাটকে হিজাব বনাম গেরুয়া ওড়না বিতর্কের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এড়াতে দুটি কলেজ ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। যার একটি আজ খুলে দেওয়া হয়।

কলেজের কর্মকর্তারা জানান, গেইটের বাইরে ভিড় এড়ানোর জন্যই তাদের কলেজে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

কলেজটির অধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ জিযে জোর দিয়ে বলেন, ছাত্রীরা কেবল হিজাব না পরলেই শ্রেণিকক্ষে যোগ দিতে পারবে।

অন্যদিকে হিজাব পরিহিত ছাত্রীরাও তাদের সিদ্ধান্তে অটল, তারাও ক্লাসে হিজাব খুলে প্রবেশ করবে না বলে জানায়।

কুন্দাপুরের কালাভারা ভরদ্বাজ এম শেট্টি কলেজে হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

কলেজটির উপাধ্যক্ষ ঊষা দেবী বলেন, আমরা তাদের হিজাব ছাড়া শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের পরামর্শ দিয়েছিলাম, যা তারা প্রত্যাখ্যান করে। তাই আমরা তাদের আগামীকাল হাইকোর্টের নির্দেশ আসা অবধি অপেক্ষা করার অনুরোধ জানায়।

বিজয়পুর জেলার শান্তিশ্বর পিইউ কলেজ এবং জিআরই কলেজে হিজাব আন্দোলনের বিপরীতে কিছু ছাত্রকে গেরুয়া ওড়না পরে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

এই হিজাব আন্দোলন শুরু হয় গত মাসে সরকারি গার্লস পিইউ কলেজে যখন কলেজটির ৬ জন ছাত্রী অভিযোগ করে যে হিজাব পরায় তাদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এরপর এই আন্দোলন ছড়িয়ে যায় কর্ণাটকের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে।

এই আন্দোলনের বিপরীতে অনেক কলেজ শিক্ষার্থীদের গেরুয়া কাপড় পরে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

হাইকোর্ট এই হিজাব বিতর্ককে কেন্দ্র করে উদিপির সরকারি প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজের ৫ ছাত্রী দায়ের করা আবেদনের শুনানি করবে কাল।

গত শনিবার বিজেপি সরকার একটি আদেশের মাধ্যমে যে সকল কাপড় ‘সমতা, অখণ্ডতা এবং জনশৃঙ্খলা’ ব্যাহত করে, যেসকল জামা নিষিদ্ধ করে। সেখানে আরও বলা হয়, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্মীয় নীতি অনুসারে কাপড় পরিধান করছে যা সমতা এবং ঐক্য নষ্ট করছে।

যদিও এই হিজাব বিতর্ক নিয়ে বিরোধী দল কংগ্রেস বিজেপি এবং এর মতাদর্শিক পরামর্শদাতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) কে দোষারোপ করায় এটি রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি নলীন কুমার বলেন, সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব অনুমোদন করবে না।

কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র বলেন, শ্রেণিকক্ষে হিজাব কিংবা গেরুয়া ওড়না কোনোটাই পরা উচিত না।