চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ভারতের কথিত অবরোধে মৃত্যু ঝুঁকিতে ৩০ লাখ নেপালি শিশু

নতুন সংবিধান প্রণয়নকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং সেই সাথে ভারতের ‘অঘোষিত’ অবরোধে নেপালে তীব্র জ্বালানি সংকট ছাড়াও দেখা দিয়েছে খাদ্য অভাব। চাল, চিনি, লবণ, সবজির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি এখন বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে ওষুধ।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, আসন্ন শীত মৌসুমে খাদ্য ও ওষুধের অভাবে নেপালের ৩০ লাখ শিশু মৃত্যু অথবা কঠিন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।

সংবিধান রচনাকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে অপ্রকাশিত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে নেপাল। এর জের ধরে হাইওয়েতে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে নেপালের ওপর অঘোষিত বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করে ভারত। গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে চলা ওই অবরোধের ফলে তীব্র জ্বালানি সংকটে পড়ে লাখ লাখ নেপালি।

নেপাল সরকার ও ভারতীয় অনেক মিডিয়া এটাকে বাণিজ্য অবরোধ বললেও ভারতীয় সরকার এটা বাণিজ্য অবরোধ বলতে অস্বীকার করে। তারা বলছে, নেপালের সীমান্ত এলাকায় প্রতিবাদ বিক্ষোভের কারণে ট্রাকগুলো সীমান্ত পাড়ি দিতে পারছে না। তবে ভারতের এই ব্যাখায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি নেপাল। নেপালের মতো সন্তুষ্ট হতে পারছে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও।

গত ২৫ এপ্রিলের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর থেকে এমনিতেই মানবেতর জীবনযাপন করছে লাখ লাখ নেপালি। ওই ভূমিকম্পে ৯ হাজার মানুষ নিহত হয়। ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর মাত্র ১৫শ’ বর্গকিলোমিটারের অস্থায়ী তাবুতে ২ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে।

এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ জানিয়েছে, ‘জ্বালানি, খাদ্য, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের মতো অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে নেপালের ৩০ লাখ নেপালি শিশু মৃত্যু অথবা কঠিন রোগের ঝুঁকিতে আছে। যাদের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।’

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনী লেক বলেন, ‘জীবন বাঁচান ওষুধ ও ভ্যাকসিন ঘাটতির ফলে এই শীতে হাইপোথারমিয়া ও অপুষ্টিতে শিশুরা ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার, স্বাস্থ্যসেবা ও ঠান্ডা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তারা এখন নতুন দুর্যোগের মুখোমুখি হবে।’

জ্বালানি সংকটের কারণে অ্যাম্বুলেন্স পরিসেবাও প্রায় বন্ধের মুখে। ফলে আগামী দুমাসে জন্ম প্রত্যাশী ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হবে বলেও জানায় ইউনিসেফ।

ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক কারিন হালসফ বলেন, ‘নেপালের শিশু এবং তাদের পরিবার দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময় অতিক্রম করছে, এই দুরাবস্থা আগামী শীতে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। তাই নেপালে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রবেশে কোনো রকম বাধা না দিতে আমরা সবাইকে আহবান জানাচ্ছি। সময় নষ্ট করার কোনো সময় নেই।’