মনে পড়ে ১৯ মার্চ, মনে পড়ে মেলবোর্ন। মনে পড়ে আলিম দার, মনে পড়ে ইয়ান গৌল্ড। তিন মাস পেরিয়ে, তবুও মনে পড়ে ম্যাশ-তাসকিনের সেই সেলিব্রেশন। আর মনে পড়ে স্বপ্ন ভাঙ্গার বেদনায় নীল একটি দিনের কথা। কতোই না স্বপ্ন ছিলো ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে নাম লেখাবে বাংলাদেশ। হয়তো স্বপ্ন ছিলো আরও বড়, ২৯ মার্চের ফাইনাল।
কিন্তু সে স্বপ্ন ডানা মেলেনি। পাকিস্তানী আর ইংলিশ আম্পায়ার দুজনের কিছু ভুল সর্বনাশ করে দিলো ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন। ১৯ মার্চই থেমে গেলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের কাছে ১০৯ রানের হার। এরপর ওয়ানডে ক্রিকেটে আর দেখা হয়নি দুই প্রতিবেশীর। তিন মাস পর বাংলাদেশ ও ভারতের ৩০তম ওয়ানডে লড়াই আজ।
চলুন ফিরে দেখি ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের আগের ৩ জয়:
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪
প্রথমবার ভারতকে হারালো বাংলাদেশ। ঘটনা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। দিবারাত্রির ওই ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করেছিলো হাবিবুল বাশারের দল। হার্ড-হিটার মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান আফতাব আহমেদের ৬৭ রান ছিলো টপ স্কোর। তবে প্রয়োজনের সময় আট নম্বরে নেমে ৩৯ বলে ৩১ রানের সলিড একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন মাশরাফি। ৫০ ওভারে স্কোর বোর্ডে ২২৯ রান তুলেছিলো বাংলাদেশ। এরপর সৌরভ গাঙ্গুলির দলকে ২১৪ তে অলআউট করে দিতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রেখেছিলেন মাশরাফি। ৩৬ রানে সেদিন ম্যাশের শিকার ছিলো শেহওয়াগ আর ধোনির উইকেট। ১৫ রানের ঐতিহাসিক ওই জয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ মাশরাফি বিন মর্তুজা।
১৭ মার্চ, ২০০৭
পরের ঘটনা আড়াই বছর পর। ২০০৭ বিশ্বকাপ আসর সেটি। ঘটনা ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর কুইন্স পার্ক ওভালে। ভেন্যু পাল্টালেও ম্যাচ জয়ের নায়ক কিন্তু ছিলেন অপরিবর্তিত। বল হাতে সেদিন আগুন ঝরিয়েছিলেন মাশরাফি। আবারও তার বলেই ক্লিনবোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিলো ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দর শেহওয়াগকে। এরপর উত্থাপা, আগারকার, মুনাফ প্যাটেলকে ফিরিয়ে দিয়ে ১৯১তেই ভারতকে প্যাকেট করেছিলেন ম্যাশ। ৩৮ রানে তার শিকার ছিলো ৪ ভারতীয়। পরে তামিম, মুশফিক এবং সাকিবের তিন তিনটা ফিফটিতে ৫ উইকেটের জয় লাল-সবুজের।
১৬ মার্চ, ২০১২
টাইগারদের শেষবার ভারত জয় ২০১২ এশিয়া কাপে। ওই ঘটনা মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে। ম্যাচটি আরও স্মরণীয় অন্য কারণে। মাস্টার ব্লাস্টার শচিন টেন্ডুলকারের শততম সেঞ্চুরির ম্যাচ সেটি। শচিনের ১১৪ রানের পরও ২৮৯ এর বেশি স্কোরবোর্ডে দিতে পারে নি ভারত। এরপর শুরু টাইগার্স শো। তামিম ইকবালের ঝকঝকে ৭০ রানের পর, জহুরুল ৫৩, নাসির ৫৪। আর সাকিব আল হাসানের ৩১ বলে ৪৯ রানের সলিড-ক্যামিও। এসবের পর আসল সময়ে ২৫ বলে ৪৬ রানের ফ্যান্টাসটিক আরেকটি ইনিংস দিয়ে ম্যাচ বের করে এনেছিলেন মুশফিকুর রহিম। অবশ্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান।
সাকিব-তামিম-মুশফিকতো আছেনই আর দুইবারের ভারত জয়ের নায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা দলের অধিনায়ক। উৎসব হবে নাকি আরেকটা!