পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হবে আজ শনিবার। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ডেপুটি স্পিকারের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেওয়ার পর এই অনাস্থা ভোট।
শুক্রবার পাকিস্তানের বিরোধীদলগুলো ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে।
এদিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিয়েছেন। তবে রায়ে তিনি ব্যথিত।
‘‘আমি চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট অন্ততঃ একবার খতিয়ে দেখুক তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি শক্তির প্রভাব রয়েছে কিনা। আদালত রায় দিতে তড়িঘড়ি করেছে।’’
গত ৩ মার্চ সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক দাবি করে ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
ডেপুটি স্পিকারের ওই সিদ্ধান্তের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
বিরোধীদলগুলো ডেপুটি স্পিকারের সেই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল বিষয়টির স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায়ে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির সেই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে পার্লামেন্ট পুনর্বহাল করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।
এর আগে গত ৮ মার্চ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে এই অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিল বিরোধীদলগুলো। ওই প্রস্তাবের ওপর পরের ৯ মার্চ ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতীয় পরিষদের এক জন সদস্যের মৃত্যুর কারণে ২৮ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবির ঘোষণা দেন স্পিকার আসাদ কায়সার।
কিন্তু পূর্বনির্ধারিত ২৮ মার্চ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাবটি উত্থাপনের পর ৩১ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। তবে ৩১ মার্চ অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার তা ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে দেন তিনি।
৩৪২ সদস্যের জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ইমরান খানকে ১৭২ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। তার দল পিটিআইয়ের সদস্য সংখ্যা ১৫৫। তবে দলের কয়েকজন সদস্য এবং জোট শরীকরা ইমরানের পক্ষ ত্যাগ করায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে হয় তাকে।