চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বড় জয়ের নতুন রেকর্ড বাংলাদেশের

‘অধিনায়ক’ মাশরাফীর ১০০ উইকেট

সিলেট থেকে: জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ। লিটন দাসের হার না মানা সেঞ্চুরিতে পাওয়া তিনশর বেশি সংগ্রহের সামনে সফরকারীরা গুটিয়ে গেছে দেড়শ পেরিয়েই। ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে বিশ্বের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে একশতম শিকারের দেখা পেয়েছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।

বাংলাদেশ-৩২১/৬ (৫০ ওভার), জিম্বাবুয়ে-১৫২/১০ (৩৯.১ ওভার)

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ৩২১ রানের পাহাড় টপকাতে গিয়ে একশর আগে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের জয়টা কত বড় হয় সেটিই ছিল দেখার। উত্তাপহীন ম্যাচে শেষপর্যন্ত রানের দিক দিয়ে রেকর্ড ব্যবধানেই সফরকারীদের হারিয়েছে মাশরাফীর দল।

৫০ ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়টি ছিল ১৬৩ রানের। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মিরপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩২০ রান তুলে প্রতিপক্ষকে ১৫৭’তে গুঁড়িয়ে দেয় টাইগাররা।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় ছিল ১৪৫ রানের। নিজেরা ৩২১ রান করে প্রতিপক্ষকে ১৫২’তে অলআউট করে রেখে সেই রেকর্ড নতুন করে লিখলেন মাশরাফীরা। জিম্বাবুয়ের মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান ওয়েসলে মাধভেরে করেন সর্বোচ্চ ৩৫ রান।

সাইফউদ্দিন তিনটি, মাশরাফী ও মেহেদী হাসান মিরাজ নেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

লিটন দাসের সেঞ্চুরির পর অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায় ম্যাচের গতি-প্রকৃতি। বাংলাদেশের সংগ্রহ পাহাড়সম করতে ডানহাতি ওপেনার রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা। চোখ জুড়ানো সব শটে ৯৫ বলে আদায় করে নেন সেঞ্চুরি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন দেড়শর পথে। হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় ফিরতে হয় ড্রেসিংরুমে।

তখনও বাংলাদেশ ইনিংসের ১৩.৪ ওভার বাকি। মাঠ ছাড়ার আগের বলটিতেই লিটন মেরেছিলেন স্লগ সুইপে অসাধারণ এক ছক্কা। ১০৫ বলে ১৩ চার, ২ ছয়ে ১২৬ রানে যান স্বেচ্ছা অবসরে।

লিটনের উল্টো পথে হেঁটেছেন অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। জিম্বাবুয়ের সাধারণ বোলিং আক্রমণের সামনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সতর্কতা দেখিয়েও পারেননি ইনিংস লম্বা করতে। ৪৩ বলে ২৪ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ৫৫.৮১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং ভক্তদের করেছে হতাশ।

কচ্ছপগতিতে রান তোলায় গ্যালারির দর্শকদের গালমন্দও শুনতে হয়েছে তামিমকে। নিরাপত্তার কাজে থাকা বিসিবির কর্মীরা পরে এক দর্শককে ধরে স্টেডিয়ামের বাইরে পাঠিয়ে দেন।

লিটন দ্রুতগতিতে রান তোলায় ওপেনিং জুটিতে ১২.৫ ওভারে আসে ৬০ রান। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুটা করেছিলেন দারুণ। কিন্তু আম্পায়ারের বিতর্কিত এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্তে ২৯ রান করে তাকে যেতে হয় সাজঘরে।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ১৯ রান করে আউট হন ডোনাল্ড ত্রিপানোর বলে। সময়ের দাবি মিটিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোহাম্মদ মিঠুন। একশর বেশি স্ট্রাইকরেটে রান তুলে বাংলাদেশকে নিয়ে যান তিনশর দিকে।

দলের সংগ্রহ আড়াইশ পার করে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। খেলেন ২৮ বলে ৩২ রানের ইনিংস। ব্যক্তিগত ফিফটি পূর্ণ করে মিঠুন সাজঘরে ফেরেন দলের রান তিনশ ছোঁয়ার আগে। ৪১ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও একটি ছয়ের মার।

চোট কাটিয়ে সাইফউদ্দিনের ফেরাটা হয়েছে দারুণ। তরুণ অলরাউন্ডারের ক্যামিও ইনিংসে নির্বিঘ্নে তিনশ ছাড়ায় সংগ্রহ। সাইফউদ্দিন ১৫ বলে তিন ছক্কায় ২৮ রানে থাকেন অপরাজিত। ৪ বলে এক ছয়ে ৭ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

অনেকদিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন মাশরাফী ও সাইফউদ্দিন। দুই পেসারই বল হাতে রেখেছেন অবদান। মাশরাফী খরুচে হলেও (৬.১ ওভারে ৩৫ রান) সাইফউদ্দিন ছিলেন খুব হিসেবি। ৭ ওভারে দিয়েছেন ২২ রান। প্রথম স্পেলের ৫ ওভারে দেন মাত্র ৬ রান। এ তরুণের অলরাউন্ড নৈপুণ্য আর লিটনের নান্দনিক সেঞ্চুরি সিরিজের প্রথম ম্যাচের বড় প্রাপ্তি। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে মঙ্গলবার।