শেরপুরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে গ্রীষ্মকালীন বাদাম চাষ নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। চরাঞ্চলের পতিত জমিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত বারি চীনা বাদাম-৮ জাতের গ্রীষ্মকালীণ বাদাম চাষ করে কম খরচে ৩৫/৪০ হাজার টাকা আয় করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশী জাতের বাদামের তুলনায় এ বাদামের সাইজ বড়, দানাগুলো বেশ পুষ্ট এবং পুষ্টিমান বেশি হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও বেশি। স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন বেশি।
স্থানীয় কৃষক জানায়, আগে যেটা আবাদ করতাম সেটা বিঘাতে হয় দুই আড়াই মণ আর এটা হয় সাড়ে ছয় মণ। আর গ্রীশ্মকালীন সময় আমার জমিটা পতিত থাকত এ পতিত সময়ে এ ফসলটা চাষ করে লাভবান হয়েছি।
শেরপুরের নকলা উপজেলার চর অষ্টাধর ইউনিয়নের মেম্বার গোলাম মোস্তফা খান বলেন, এখানে গ্রীষ্ম কালীন কোন ফসল হয় না আমাদের কৃষকের জন্য খুবই লাভজনক মৌসুম।
শেরপুর-জামালপুরের চরাঞ্চলে গ্রীষ্মকালীণ বারি চীনাবাদাম-৮ চাষে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ করে যাচ্ছে জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
বারি’র কৃষি বিজ্ঞানীরা জানান, তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকরা বারি চীনা বাদাম-৮ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। শেরপুরের ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলেও এ জাতের বাদামের চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে এখানকার চরাঞ্চলের চিত্রও পাল্টে যাবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেরপুরের ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের কৃষকরাও গ্রীষ্মকালীণ বাদাম চাষ করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবেন। শেরপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. আব্দুস সালাম বলেন, কৃষকরা ভাল দাম পেয়ে থাকে এই চীনা বাদাম বিক্রি করে তারা ভাল লাভবান হচ্ছেন।
সদর উপজেলার ভাগলগড়, কুলুর চর, ভাগলদী, নকলার নারায়ণখোলার চরাঞ্চলে গ্রীষ্মকালীণ বারি চীনাবাদাম চাষ করে কৃষকরা একরপ্রতি শুকনা অবস্থায় প্রায় ১০০ মণ করে ফলন পেয়েছেন। বাজারে এবার বাদামের দামও বেশ ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হয়েছেন।