সবশেষ ২০২১ সালের ব্যালন ডি’অর প্রদান নিয়ে বড় বিতর্ক আছে। রবার্ট লেভানডোভস্কি ও মোহাম্মদ সালাহকে কাটিয়ে লিওনেল মেসির সপ্তম ব্যালন ডি’অর নিয়েও বিস্তর আলোচনা। আগামীতে এমন বির্তক এড়াতে চারটি বড় পরিবর্তন আনছে ফরাসি সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবল।
শুক্রবার ফ্রান্স ফুটবল জানিয়েছে, ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের পরবর্তী অনুষ্ঠানের আগে বেশ কয়েকটি সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাবে। নতুন নিয়মে লিওনেল মেসি বা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের আধিপত্য কমার সম্ভাবনা বেড়েছে। তেমনি অন্যদেরও থাকছে পুরস্কার অর্জনের সম্ভাবনা।
নতুন চার নিয়মের মধ্যে পরিবর্তন আসবে সেরা খেলোয়াড় খোঁজার সময়ের ব্যাপ্তিতে। এখন পর্যন্ত যতগুলো ব্যালন ডি’অর পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে সেখানে সিদ্ধান্ত নিতে খেলোয়াড়দের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অর্থাৎ এক বছরের পারফরম্যান্স বিচার করা হত। এতে ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুটি মৌসুমের দুটি অর্ধেক বিবেচনায় আসতো।
নতুন নিয়মে বছর নয়, বিবেচনায় আনা হবে এক মৌসুমের পারফরম্যান্স। অর্থাৎ, ২০২১-২২ মৌসুমের শেষে বিচার হবে কে হতে যাচ্ছেন ২০২২ সালের সেরা। কাতারে ফিফা বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স বিবেচিত হবে পরের বছরের ব্যালন ডি’ অর প্রদানে।
ব্যালন ডি’অর প্রদানের তালিকা প্রস্তুতিতেও আসবে পরিবর্তন। আগে ফ্রান্স ফুটবল পত্রিকাটির লেখকেরাই তালিকা দিতেন। নতুন নিয়মে সেই তালিকাকে তর্কাতীত, ন্যায্য ও প্রাসঙ্গিক করতে যুক্ত হবেন আরও কয়েকজন।
ফ্রান্স ফুটবল ও লে’কিপের লেখকদের সঙ্গে তালিকা প্রস্তুতে থাকবেন দিদিয়ের দ্রগবাও। এ ছাড়া ভিয়েতনামের সাংবাদিক থ্রুং আন এনগোচের কাছ থেকে ছেলেদের ৩০ জন এবং মেয়েদের ফুটবলে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা হ্লাভাচকোভার কাছ থেকে ২০ জনের নাম চাওয়া হবে। সব নাম জড়ো করে পরে প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত তালিকা।
২০২১ সালে ব্যালন ডি’অর প্রদানে ভিন্ন দেশের ১৭০ জন সাংবাদিক ভোট দিতে পেরেছিলেন। নতুন নিয়মে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে ভোটিংয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন থেকে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০ দেশের সাংবাদিক দিতে পারবেন ভোট। এই নিয়মের কারণে বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশের সাংবাদিকই অংশ নিতে পারবেন না সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে।
ব্যালন ডি’অর প্রদানের ক্ষেত্রে নির্বাচকরা আগে খেলোয়াড়দের অতীত পারফর্মও বিবেচনায় আনতেন। নতুন নিয়মে এখন আর সেটি করা যাবে না, শুধু এক মৌসুমের পারফর্মই বিবেচ্য হবে। ব্যালন ডি’অর ব্যক্তিগত অর্জনের পুরস্কার বলে প্রথমে এটিকে ব্যক্তিগত অর্জন হিসেবে বিবেচ্য হবে। ব্যাক্তিগত অর্জনের পাশাপাশি একে দলগত সাফল্যেও বিচার করা হবে।
এছাড়া সম্মানজনক পুরস্কার প্রদানে পারফর্মের পাশাপাশি খেলোয়াড়ের মান এবং খেলোয়াড়ি চেতনাও দেখা হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বিজয়ীকে ভোট দেওয়ার সময় খেলোয়াড়ের খ্যাতি এবং পূর্ববর্তী বছরগুলিতে পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হবে না।
১৯৫৬ সাল থেকে বছরের সেরা ফুটবলারকে ব্যালন ডি’অর দিয়ে আসছে ফরাসি সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবল। নব্বইয়ের দশক থেকে ইউরোপের বাইরের খেলোয়াড়দেরও পুরুস্কারের আওতায় আনা হয়। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাতবার পুরস্কারটি জিতেছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। পাঁচবার ব্যালন ডি’অর নিজের করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।